চট্টগ্রামের চিকিৎসকের শরীরে করোনা, সন্দেহে প্রবাসী

বাঁশখালীও কি হাঁটছে সাতকানিয়ার পথে?

যে চিকিৎসক নিজেই নিজেকে ‘করোনা যোদ্ধা’ ঘোষণা দিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত দায়িত্বের বাইরে টেলিফোনেও মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন— শেষপর্যন্ত তিনিই আক্রান্ত হলেন করোনা ভাইরাসে। কিভাবে তিনি আক্রান্ত হলেন সেই প্রশ্নই এখন সবার মনে। অনেকেরই ধারণা প্রবাসী কারও কাছ থেকেই তার শরীরে সংক্রমিত হয়েছে করোনাভাইরাস। আর এটি যদি সত্য হয় তবে বাঁশখালীকেও পার্শ্ববর্তী উপজেলা সাতকানিয়ার পথে হাঁটতে হবে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এই তরুণ চিকিৎসক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবাসীদের প্রচুর স্বজনকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। আবার প্রবাসীরাও চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। সর্বশেষ ৭ এপ্রিল একজন প্রবাসীর স্বজন চিকিৎসাসেবা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন। আমার সন্দেহ, উনার কাছ থেকে সংক্রমিত হতে পারি।’

ওই চিকিৎসক জানান, এরপর থেকেই তিনি নিজে থেকে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলেছেন। একপর্যায়ে নমুনা দেন করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য। ১৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) চট্টগ্রামের অন্য ১০ জনের সাথে তারটাও করোনা পজিটিভ আসে।

সর্বশেষ কী অবস্থা জানতে চাইলে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘আমি ভালো আছি, আল্লাহ চাইলে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবো। সবার দোয়া চাই যাতে সুস্থ হয়ে আবার চিকিৎসাসেবা শুরু করতে পারি।’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতেই তাকে নগরীর কাতালগঞ্জের বাসা থেকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। তার ফ্ল্যাটের ওই বাড়িটি প্রশাসন লকডাউন করে দিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা আগে থেকেই হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলছেন বলেও জানা ওই চিকিৎসক।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার জানান, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে উপজেলার ৩৬৯ জন প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন না মানার সংবাদে প্রশাসন বিভিন্ন সময় তদারকিতে গিয়ে ৩ জনকে জরিমানাও করেছেন।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বিশেষায়িত হাসপাতাল ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ল্যাবে মঙ্গলবার মোট ১১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে চট্টগ্রামের ১১ জনসহ ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। জেলার সাতকানিয়ার ৫ জন, বোয়ালখালীর ১ জন। নগরের পাহাড়তলীর একই পরিবারের ৪ জন আর এই চিকিৎসকের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পায় বিআইটিআইডি ল্যাব। সবাইকে রাতে আন্দরকিল্লাস্থ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলুশনে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। সাতকানিয়া সর্বশেষ ৫ জন শনাক্ত হলে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm