চট্টগ্রামের গ্রামে এ কেমন ‘মহিলা গ্যাং’!

৮-১০ জনের একদল মহিলা। হঠাৎ করেই শুরু হয় তাদের বেপরোয়া আচরণ। মহিলা গ্যাংটি সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের কুতুব পাড়ায় নিয়মিত মহড়া দেয়। এই গ্যাং এলাকায় একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালালেও তাদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায় না স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের অভিযোগ এসব মহিলাদের দিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে কিছু কতিপয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যু।

জানা গেছে, এসব মহিলাদের স্বামী বিদেশে থাকার সুযোগ নিয়ে ভূমি দস্যুরা তাদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য এসব গ্যাং পালে। এমনকি এসব মহিলা দিয়ে অনৈতিক কাজও চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

গত ১৯ জুলাই সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের কুতুব পাড়ায় একজন সরকারি কর্মকর্তার বাড়িতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ ওঠে ওই মহিলা গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে।

পরে ওই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে একইদিন সাতকানিয়ায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন সরকারি চাকরিজীবী মমতাজ মিয়ার ছেলে মোজাফ্ফর আহমদ (৩২)।

মোজাফ্ফর আহমদ বলেন, সাতকানিয়ার এই মহিলা গ্যাংয়ের সদস্য পারভীন আক্তার, শাহিন আক্তার, রুমি আক্তার ও ছেনোয়ারা আক্তারসহ আরও কয়েকজন প্রতিনিয়ত আমাকে হয়রানি করে যাচ্ছে। সর্বশেষ ১৯ জুলাই তারা আমার বাড়িতে গিয়ে ভাংচুর চালায় এবং আমার বাড়ির লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিয়ে যায়। এছাড়া তারা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। যাতে আমরা শহর থেকে গ্রামে যেতে না পারি। তারা মহিলা গ্যাংয়ের শক্ত সদস্য হওয়ায় আমি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বিচার পাচ্ছি না।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতকানিয়া থানার এসআই অনুপম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ঐ মহিলা গ্যাং সদস্যের স্বামীরা প্রবাসে থাকার সুবাদে তারা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় কলোনি স্থাপন করে রাতভর বখাটে ও মাদকসেবীদের আড্ডা বসায়। আর সেখান থেকেই মূলত কোথায় কখন কার উপর হামলা চালাবে এটি পরিকল্পনা করে তারা।

জনশ্রুতি রয়েছে, ওই কলোনি থেকে সাগরের মা নামে খ্যাত এক মহিলা ভাড়া থাকতেন। তিনি মহিলা গ্যাংয়ের বাসায় থাকাকালীন সময়ে লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদে ইয়াবা নিয়ে গ্রেপ্তার হন।

জানা গেছে, ওই মহিলার নেতৃত্বে কলোনিতে অসামাজিক কাজ পরিচালনা করা হতো।

স্থানীয় মো. জয়নাল নামের এক ব্যক্তি বলেন, মেয়েগুলো আসলেই সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই নারী নির্যাতন মামলা করার ভয় দেখায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আরেকজন বলেন, আসলে এসব নারীদের অপকর্ম সম্পর্কে কেউ বলতে পারে না। তারা যখন-তখন মানুষকে লাঞ্ছিত করে।

এদিকে, বুধবার (২৯ জুলাই) ওই মহিলা গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে মোজাফ্ফর আহমদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের পেশকার মো. মিজান বলেন, সোনাকানিয়ার কিছু মহিলার বিরুদ্ধে একজন বাদী হয়ে একটা অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া আর বেশিকিছু বলতে পারছি না।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!