চট্টগ্রামের গ্যাস চলে যাচ্ছে বাইরে, বরাদ্দ কমছে দিন দিন

আবাসিকে চুলাই জ্বলে না গ্যাসের অভাবে

চট্টগ্রাম থেকে বরাদ্দকৃত গ্যাস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাইরে। আগে চাহিদার চেয়েও অনেক কম ২৯০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রামের বরাদ্দ রাখা হলেও এখন সেটাও দেওয়া হয়েছে কমিয়ে। বর্তমানে মাত্র ২৬৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছে চট্টগ্রাম।

গত ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর সেখানকার জন্য বরাদ্দ গ্যাসও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের বাইরে। কর্ণফুলী গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড (কেজিএসএল) থেকে দিনে ৪২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয় রাষ্ট্রায়ত্ত ওই প্রতিষ্ঠানটিতে।

দেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি আমদানি শুরু হওয়ার পর সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল, আমদানির এলএনজি দিয়ে চট্টগ্রামের চাহিদাই পূরণ করা হবে সবার আগে।উচ্চমূল্যের কারণে বাংলাদেশে গত আগস্ট থেকে স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি কেনা বন্ধ রয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির মাধ্যমে কাতার এবং ওমান থেকে এলএনজি কেনা অব্যাহত আছে।

জানা গেছে, বর্তমানে মহেশখালী ফ্লোটিং এলএনজি টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ৩৮০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। এই এলএনজি থেকে ২৬৭ মিলিয়ন ঘনফুট বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রামে।

চলতি নভেম্বর থেকে চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাস সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। একদিকে আবাসিকের চুলাগুলো প্রায় নিভু নিভু, অন্যদিকে গ্যাসের অভাবে শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদনেও নেমেছে ধস।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর বেশিরভাগ এলাকাতেই দিনের বেলায় রান্নার চুলা জ্বলে না। পাইপলাইনের আবাসিক সংযোগে মোটামুটি গ্যাস পাওয়া গেলেও সেই অবস্থাও বদলে গেছে। সকালে গ্যাসের চাপ কোথাও কোথাও কম থাকলেও অনেক জায়গাতে আবার চুলাই জ্বলছে না। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত গ্যাসের চাপ মোটামুটি থাকলেও ওই সময় গৃহস্থালি কাজে গ্যাস ব্যবহারের সুযোগও থাকে না। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে পাইপলাইনের গ্যাসের পাশাপাশি এলপিজি সিলিন্ডারে ঝুঁকেছেন বাধ্য হয়ে। তবে এতে খরচ বেড়ে গেছে বহুগুণ।

অন্যদিকে শিল্পকারখানাগুলোও ধুঁকছে গ্যাসের অভাবে। অব্যাহত গ্যাস সংকটে বেশিরভাগ কারখানাতেই ধস নেমেছে উৎপাদনে। কোন কোন প্রতিষ্ঠান ডিজেল দিয়ে বয়লার চালিয়ে উৎপাদন সচল রাখার চেষ্টা করছে। যদিও এর ফলে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন খরচও একইসঙ্গে বেড়ে যাচ্ছে।

বেশ আগে থেকেই চট্টগ্রামে গ্যাস ব্যবহারকারী বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধুমাত্র আনোয়ারায় অবস্থিত সিইউএফএল ও কাফকোতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে আসছে। এর মধ্যে সপ্তাহখানেক আগে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিইউএফএলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর চট্টগ্রামের বরাদ্দ থেকে প্রায় ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিইউএফএলের জন্য বরাদ্দ গ্যাস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সারকারখানায়।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm