চট্টগ্রামের গোল্ডেন সনে মালিকের হাতে মার খেলেন শ্রমিক নেত্রী, বিক্ষোভে ফুঁসে উঠল কর্মীরা

মালিকের দাবি ‘আদর’ করেছেন

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর খোয়াজনগরে অবস্থিত গোল্ডেন সন লিমিটেড কারখানায় পাঁচ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত।

গত রোববার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া লাইন রিপোর্টার ও শ্রমিক নেত্রী ফারজানা আক্তার মীম (৩২)-কে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও তাইওয়ানের নাগরিক লিন ইউ-চেন শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন—এমন অভিযোগে আজ (৭ মে) দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধে নেমেছেন শ্রমিকরা।

বুধবার (৭ মে) দুপুর ১২টা থেকে প্রধান সড়কে শ্রমিকদের অবস্থান চলছিল।

এর আগে গত রোববার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে শত শত শ্রমিক কারখানার সামনে পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেন। দাবি ছিল—বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি, নির্ধারিত সময়ে বেতন প্রদান, দুই কিস্তিতে বেতন না দেওয়া, মাসের ১-১০ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ এবং ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত নিয়ম মানা।

রোববারের আন্দোলনের জের ধরে আজ সকালে কারখানায় গেলে ফারজানাকে কারখানা মালিকের স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান লিন ইউ চেন অফিসে ডেকে গালমন্দ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয় এবং তারা পুনরায় প্রধান সড়কে বিক্ষোভে অংশ নেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে গোল্ডেন সন লিমিটেড কারখানার লিগ্যাল অ্যান্ড অ্যাসেট ম্যানেজার ওমর হায়দার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, “ফারজানা আক্তার মীমকে কোনো ধরনের মারধর কিংবা শারীরিকভাবে নাজেহাল করা হয়নি। সকালে চেয়ারম্যান লিন ইউ-চেন তাকে শুধু আদর করে ডেকে মালিকের চেয়ারে বসিয়ে বলেন, ‘তুমি আজ পুরো কারখানা লিড দাও।’ এর বাইরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”

শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সুলাইমান বলেন, ‘রোববারের আন্দোলন বেতন ও বোনাস সংক্রান্ত ছিল। আজ ফের আন্দোলনে নামার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়েছে।’

শ্রমিক নেত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে যার বিরুদ্ধে, ৫১ বছর বয়সী সেই লিন ইউ-চেন তাইওয়ানের নাগরিক। বর্তমানে তিনি গোল্ডেন সন লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি তিনি জিএসএল এক্সপোর্ট লিমিটেড ও গোল্ডেন ইনফিনিটি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্বও পালন করছেন।

অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল আহমেদ জনতা ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডেরও স্পন্সর পরিচালক। এছাড়া তিনি জিএসএল এক্সপোর্ট লিমিটেড ও গোল্ডেন ইনফিনিটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, গত এক বছরে চট্টগ্রামে ৫০টি কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়েছে, যার মধ্যে দুটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৮টি বিজিএমইএ, ২টি বিকেএমইএ, ১টি বিটিএমএ, ৯টি বেপজা এবং ২২টি অন্যান্য সংগঠনের সদস্যভুক্ত। এছাড়া দুটি কারখানা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

জেজে/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm