চট্টগ্রামে আদালতের কাছে থাকা নথির ভেতর থেকে ২৮ কোটি টাকার চেক চুরি করার অভিযোগ ওঠা আইনজীবী জোবায়ের মােহাম্মদ আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক মামলা দায়েরের পর এবার তাকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এডভোকেট জোবায়ের চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য (লিন নম্বর ২০১২০৪৪২৪৮)। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয় অভিযুক্ত জোবায়েরের বিরুদ্ধে। ২২ সেপ্টেম্বর সেই শোকজের জবাব পাওয়ার পর আইনজীবী সমিতি সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তে পৌঁছায়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ পঞ্চম আদালতে দায়রা ১৮৩৭/২০১৪ নথি থেকে ২৭ কোটি ৯৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭২ টাকার চেক চুরির লিখিত অভিযোগ দেন ওই আদালতের বিচারক জহির উদ্দিন।
নথিটি ছিল চট্টগ্রামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এসএ গ্রুপের বিরুদ্ধে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার দায়ের করা চেক প্রতারণার মামলার। শিল্পগ্রুপ এসএ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসএ রিফাইনারি লিমিটেডের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের এক ঘটনায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার পক্ষ থেকে ২০১৩ সালে ২৪ নভেম্বর পঞ্চম যুগ্ম চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা হয়। পরে ২৭ কোটি ৯৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭২ টাকার চেক প্রত্যাখ্যানের সেই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।
চেক চুরির ঘটনায় মহানগর দায়রা জজের কাছে পাঠানো অভিযোগে জানা গেছে, অ্যাডভােকেট জোবায়ের মােহাম্মদ আওরঙ্গজেব গত ৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের অফিস সহায়কের কাছ থেকে দায়রা-১৮৩৭/২০১৪ মামলার নথিটি দেখার জন্য চেয়ে নেন। অফিস সহায়ক নথির ভেতরে থাকা সব কাগজপত্র যাচাই করে পুরো নথিটি দেখার জন্য অ্যাডভােকেট জোবায়েরকে দেন।
এর কিছু সময় পর ওই মামলার নথিটি অফিস সহায়কের হাতে আসার পর তিনি দেখেন, নথির ভেতরে থাকা ২৭ কোটি ৯৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭২ টাকার চেকটি সেখানে নেই। এরপর অফিস সহায়ক ও বেঞ্চ সহকারী মিলে অ্যাডভােকেট জোবায়েরকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ না পেয়ে সন্ধ্যা সাতটার দিকে চেক গায়েবের বিষয়টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জহির উদ্দিনকে অবহিত করেন তারা। আদালতের বেঞ্চ সহকারী একইসঙ্গে বিষয়টি জানান চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিনকেও।
পরে বেঞ্চ সহকারী মোবাইলে যোগাযোগের মাধ্যমে অ্যাডভােকেট জোবায়েরের অবস্থান শনাক্ত করে ৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে নগরীর হোটেল আগ্রাবাদ থেকে চুরি যাওয়া চেকটি উদ্ধার করে আনেন।
এই ঘটনার পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর এসএ গ্রুপের আইনজীবী না হয়েও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে বক্তব্য দেওয়ায় অ্যাডভােকেট জোবায়েরের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে এসএ গ্রুপ।
সিপি