চট্টগ্রামের আবাসিক হোটেলগুলোতে ভিড় বাড়ছে বন্যা দুর্গত মানুষের। একইসঙ্গে চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়া পর্যটকরাও বাড়ি ফিরতে না পেরে দিন কাটাচ্ছেন হোটেলে। আশপাশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা হওয়ায় আগেভাগে অনেকে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন নগরীর বিভিন্ন হোটেলে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর এ কে খান, অলঙ্কার মোড়সহ বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় বন্যা দেখা দেওয়ায় পানি বাড়ার আগ মুহূর্তে অনেকে পরিবার নিয়ে অবস্থান নেন হোটেলে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম নগরীর প্রবেশদ্বার সিটি গেট, এ কে খান, কর্নেল হাট, অলঙ্কার মোড়ের আবাসিক হোটেলগুলোতে কোনো রুম খালি নেই। আবার কক্সবাজার, কাপ্তাইসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ঘুরতে আসা অনেক পর্যটক ঠাঁই নিয়েছেন নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে। সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় তারা চট্টগ্রামের আটকা পড়েন।
শুক্রবার রাত ১টায় কথা হয় অলঙ্কার মোড়ের ‘বাংলাদেশ টুডে’ হোটেলের ম্যানেজার আব্দুর রহিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে হোটেলের কোনো রুম খালি নেই।
ফেনীর পরশুরামের বাসিন্দা প্রবাসী রুস্তম আলী ও সাইফুল ইসলাম পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে উঠেছেন এ কে খান এলাকার ‘নীল আবাসিক হোটেলে’। বন্যার পানি এলাকায় প্রবেশ করলে তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন।
ঢাকা সাভার থেকে চট্টগ্রাম এসে আটকা পড়েন ফরিদ হোসেন। পরিবারের পাঁচ জন সদস্য নিয়ে আবাসিক হোটেলে থাকছেন দু’দিন ধরে।
রুস্তম আলী নামের নরসিংদীর এক বাসিন্দা জানান, কক্সবাজার থেকে কষ্ট করে পৌঁছেছি চট্টগ্রাম। বাস চলাচল না করায় বাধ্য হয়ে হোটেলে থাকছি। বেশিরভাগ হোটেলেই রুম খালি নেই। কোনোভাবে একটি রুম ম্যানেজ করতে পেরেছি।
অলঙ্কার মোড়ের ‘হোটেল ওয়েস্টিন ইন’ এর স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি রুমে চার জনের স্থলে পাঁচ থেকে সাত জন পরিবার নিয়ে থাকছেন। তাদের জন্য স্বল্প মূল্যে রুম ভাড়া রাখছি। রুম না থাকায় অনেককে হোটেলের ফ্লোরে চাদর-বালিশ দিয়ে বিনা মূল্যে থাকা ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে ভারতের ত্রিপুরার বাঁধ খুলে দেওয়া, পাহাড়ি ঢল ও ভারীবৃষ্টিতে ফেনীর বিলোনিয়া, লাল পোল, পশুরাম, আনন্দপুর, নোয়াখালীর রায়পুর, চৌমুহনীসহ চাঁদপুরের বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তার জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে দুর্গত এলাকায় পৌঁছেছে।
জেএস/ডিজে