চট্টগ্রামসহ দেশের ৫১টি সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বা বৈকালীন চেম্বার শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) থেকে।
প্রাথমিকভাবে ১২টি জেলা সদর হাসপাতাল এবং ৩৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সরকারি চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন। ৩০ মার্চ বেলা ৩টায় একযোগে এই হাসপাতালগুলোর সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালে চালু করা হবে।
প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের আট জেলা, ঢাকা বিভাগের ১০ জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা, খুলনা বিভাগের চার জেলা, রাজশাহী বিভাগের তিন জেলা, রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা, বরিশাল বিভাগের তিন জেলা এবং সিলেট বিভাগের চার জেলায় ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে চট্টগ্রাম বিভাগের আট জেলার স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এগুলো হলো— চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল ও পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল, বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল এবং ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নোয়াখালী সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
ঢাকা বিভাগের ১০ জেলায় যেসব হাসপাতালে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে, সেগুলো হলো— মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, রাজবাড়ি জেলা সদর হাসপাতাল, ঢাকার সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার হাসপাতালগুলোর মধ্যে রয়েছে— জামালপুর জেলা সদর হাসপাতাল এবং সরিষাবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
খুলনা বিভাগের চার জেলার হাসপাতালগুলো হলো— ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতাল, যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
রাজশাহী বিভাগের তিন জেলার হাসপাতালগুলোর মধ্যে রয়েছে— নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল ও সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার হাসপাতালগুলো হলো— ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা সদর হাসপাতাল, দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুরের বদরগঞ্জ ও গংগাচরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
বরিশাল বিভাগের তিন জেলার হাসপাতালের মধ্যে রয়েছে— ভোলা জেলা সদর হাসপাতাল ও চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরিশালের আগৈলঝড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
সিলেট বিভাগের চার জেলার হাসপাতালগুলো হলো— সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল ও ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেটের গোপালগঞ্জ ও বিশ্বনাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
এদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “ইনশাআল্লাহ ৩০ মার্চ বেলা ৩টা থেকে দেশের প্রায় ৫০টি সরকারি হাসপাতালে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যমান সরকারি স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি ‘বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত’ সরকারি চিকিৎসকরা রোগী দেখবেন ও বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করবেন।”
পর্যায়ক্রমে খুব দ্রুতই দেশের সকল জেলা ও উপজেলার সরকারি হাসপাতালেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে উল্লেখ করে ওই পোস্টে আরও বলা হয়, ‘যেখানে বিকেলে বা সন্ধ্যায় চিকিৎসা নিতে মানুষকে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল/ক্লিনিকে সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হতো, এখন প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট করা হাসপাতালগুলোতে দুপুরের পরও নামমাত্র ফি দিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের রোগী দেখাতে পারবেন, চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন লাখ লাখ সাধারণ মানুষ।’