চকরিয়ার বদরখালীর মাতারবাড়ি পাড়া গ্রেফতার আতংকে পূরুষ শূণ্য

মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া :

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার আতঙ্কে পূরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের চকরিয়ার উপকুলীয় ইউনিয়ন বদরখালীর মাতারবাড়ি পাড়া। সন্ধ্যা হলেই তাঁরা ঘর-বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনসহ নানা স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। আবার অনেকেই ঘটনার পর থেকেই অজানা স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

গ্রেফতার-আতঙ্ক

 

গত ২০ আগস্ট চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান বাদি হয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ৪’শ ব্যক্তিকে আসামী করে মামলা করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, গত ১৭ আগস্ট রাতের যে কোনো এক সময় বদরখালী ইউনিয়নের মাতারবাড়ি পাড়ার বাসিন্দা রফিক আহমদ (৪৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে খুন করে তিন নং  ব্লক এলাকার একটি চিংড়ি প্রকল্পে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা।

 

১৮ আগস্ট সকালে স্থানীয় লোকজন ও নিহতের আত্মীয়-স্বজন তাঁর লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করে। ওই সময় পর্যন্ত রফিকের মৃত্যুকে স্বাভাবিক হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ১৯ আগস্ট বাড়ির পাশের আজবাহার বেগম (৫০) নামের এক নারীর কথা-বার্তায় সন্দেহ হলে রফিককে খুন করা হয়েছে কিনা এলাকার লোকজন জানতে চায় তার কাছে।

 

এসময় আজবাহার খুনের ঘটনার সঙ্গে রফিকের ব্যবসায়ীক অংশীদার আবদুল আজিজ (৪৫) ও তিনি জড়িত আছেন বলে জানায়। এসময় গ্রামের উত্তেজিত লোকজন অংশীদারদের (শতাধিক ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট) কার্যালয়টি ভাঙচুর করে এবং আবদুল আজিজকে ধরে এনে বেঁধে রাখে।

 

চকরিয়া থানার পুলিশ সূত্র জানায়, খবর পেয়ে গ্রামবাসীর হাতে আটক দুইজনকে ছাড়িয়ে নিতে বদরখালী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা মাতারবাড়ি পাড়া এলাকায় গেলে লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়। গুরুতর আহতাবস্থায় কনস্টেবল আবদুল মতিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চকরিয়া থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ১৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে গ্রামবাসীর হাতে আটক দুইজনকে ছাড়িয়ে নেয় ও হামলার কবল থেকে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে।

 

এ ঘটনায় গত ২০ আগস্ট রাতে চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান বাদি হয়ে অজ্ঞাত চারশত জনের বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করেন। এছাড়া গত ২১ আগস্ট ব্যবসায়ী রফিক আহমদকে খুনের ঘটনায় তাঁর ভাই ওয়ায়েজ উদ্দিন বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আজবাহার ও আবদুল আজিজসহ চারজনকে আসামি করা হয়। তাঁদের দুইজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, আদালতের নির্দেশে গত ২৮ আগস্ট রফিকের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। জেলা প্রশাসক নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ মরদেহ উত্তোলন করে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট প্রনয়ন পূর্বক কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গ থেকে ময়না তদন্ত করেন।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো.জহিরুল ইসলাম খান বলেন, মামলা হলেও হত্যা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকায় ডাক্তারী রিপোর্ট পেলেই হত্যার আসল রহস্য উদঘাটিত হবে।

কক্সবাজার সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার(এএসপি) মোহাম্মদ মতিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত চলছে। দায়ি ব্যাক্তিদের সনাক্তপূর্বক আইনের আওতায় আনা হবে। নিরহ কোন ব্যাক্তিকে হয়রানি করা হবেনা।

 

এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!