সম্প্রতি অতি ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনি, সিলেটের হবিগঞ্জসহ ১১ জেলা। বন্যার কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে এসব এলাকার বানভাসি মানুষ। এজন্য মানবিক কারণে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লীলা কীর্তন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শোভাযাত্রাসহ এসব অনুষ্ঠানের অর্থ বন্যার্তদের সহায়তায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে পরিষদের অস্থায়ী অফিসে চকরিয়া উপজেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের কার্যকরী কমিটির সদস্যরা এ সিদ্ধান্ত নেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক সুভাষ চন্দ্র দাশ, সভাপতি নারায়ণ কান্তি দাশ, কার্যকরী সভাপতি শ্রীদুল রঞ্জন দাশ, সাধারণ সম্পাদক নন্দরাম দাশ, অর্থ সম্পাদক উজ্জল দে (শিমুল), শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী রজতজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক মুকুল কান্তি দাশ, সদস্য সচিব রঞ্জন দাশ (মনু)।
চকরিয়া উপজেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি নারায়ণ কান্তি দাশ, কার্যকরী সভাপতি শ্রীদুল রঞ্জন দাশ ও সাধারণ সম্পাদক নন্দরাম দাশ এবং অর্থ সম্পাদক উজ্জল দে (শিমুল) জানান, গত ২৪ বছর ধরে চকরিয়ায় জাঁকজমকভাবে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী তিথিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লীলা কীর্তন, আলোচনা সভা, অধিবাস এবং মহানামযজ্ঞ অনুষ্ঠান করে আসছি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ১১ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি খুব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অসহায় জীবনযাপন করছে বানভাসি মানুষ। তাই এসব কিছু বিবেচনা করে এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া কিছু অনুষ্ঠানও কমিয়ে এনেছি। আমরা বাতিল এসব অনুষ্ঠানের অর্থ প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী রজতজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক মুকুল কান্তি দাশ ও সদস্য সচিব রঞ্জন দাশ মনু বলেন, এ বছর আমরা ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রজতজয়ন্তী উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেজন্য গত তিন মাস থেকে আমরা ছয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সূচি সাজিয়েছিলাম। এতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সাধু-সন্ন্যাসী, দেশবরেণ্য শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এছাড়া ষোড়শ প্রহরব্যাপী নাম কীর্তনের আয়োজন করা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, সাম্প্রতিক দেশের ১১ জেলায় ভয়াবহ বন্যা হওয়ায় বিপযস্ত হয়ে পড়েছে ওইসব এলাকার বানভাসি মানুষ। এসব কথা বিবেচনা করে ছয়দিন অনুষ্ঠানের মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা, লীলা কীর্তন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানের অর্থ বানভাসি মানুষের সহায়তা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হবে।
তবে ২৬ আগস্ট ভাগবত পাঠ, শ্রী কৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পূজা, ২৭ আগস্ট মহানামযজ্ঞের শুভ অধিবাস এবং ২৮ ও ২৯ জুলাই যথারীতি ষোড়শ প্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে। এসব অনুষ্টানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানান আয়োজকরা।
ডিজে