চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজারে রাস্তা-ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। তবে অভিযান শেষ হতে না হতেই ফের দখল হয়ে যায় রাস্তা-ফুটপাত। এ যেন চোর-পুলিশ খেলা।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে চকবাজার কাঁচাবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন সিটি কর্পোরেশনের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজন।
অভিযানে উচ্ছেদ করা হয় ওই এলাকার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা।
সোমবার সন্ধ্যায় সরেজমিন দেখা গেছে, চকবাজার কাঁচাবাজারের কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনে থেকে ফুলতলা এলাকায় রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বসানো হয়েছে পর্যন্ত শতাধিক অবৈধ দোকান। এসব দোকান জ্বলছে বৈদ্যুতিক বাতি।
স্থানীয়রা জানান, সিটি কর্পোরেশনের অভিযানেও সুফল নেই। অভিযান শেষ হতে না হতে ফের দখল হয়ে যায় রাস্তা ও ফুটপাত। এসব ঘিরে রয়েছে অবৈধ বাণিজ্য। অথচ চকবাজার কাঁচাবাজারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা খালি পড়ে আছে উদ্বোধনের পর থেকে। সেখানে দিন-রাত এখন বখাটের আড্ডা। আর কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনেই দখলের মহোৎসব।
পথচারী মো. জমির বলেন, ১০ বছর ধরে একই দৃশ্য দেখছি। অবৈধ দখল বাণিজ্যে রাস্তা-ফুটপাতে হাঁটাচলায় দায়। সন্ধ্যা থেকে যেন দখলের মহোৎসব শুরু হয়। অথচ সিটি কর্পোরেশনের কাঁচাবাজার খালি পড়ে আছে বছরের পর বছর। এটি চালুর কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে যে যেভাবে পারছে রাস্তা-ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছে।
জানা গেছে, অভিযানের শুরুতে কাঁচাবাজারে পেছন দিকের বিভিন্ন দোকানের মালামাল রাস্তা দখল করে রাখায় মালিককে সতর্কের পাশাপাশি দোকানের সামনের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে দুপুরে অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়ায় অবৈধ দখলকারীরা যে যার মতো মালামাল সরিয়ে নিতে শুরু করে। উধাও হয়ে যায় শ’ খানেক ভ্যানগাড়ি। কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনে রাস্তা দখল করে বসানো সবজি বাজারও মুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যায়।
এছাড়া অনেকে দোকান বন্ধ করে সরে পড়েন। এসময় মুহূর্তেই পাল্টে যায় চকবাজারের দৃশ্য। রাস্তা-ফুটপাতে চলাচলে ফিরে আসে স্বস্তি। এসময় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পথচারীরা অভিযানের পাশাপাশি নিয়মিত তদারকিরও দাবি জানান।
অভিযানে আধুনিক চকসুপার মার্কেটের সামনে থেকে ফুলতলা এলাকা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করার পাশাপাশি রাস্তা ও ফুটপাত পরিষ্কার করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এসব কাজ সম্পন্ন করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি কর্পোরেশনের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজন বলেন, ‘রাস্তা-ফুটপাত দখলমুক্ত করতেই এই অভিযান। অভিযানে প্রায় অর্ধ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।’
পুনরায় দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা উচ্ছেদ করে চলে আসার পর হয়তো তারা আবার বসে পড়েছে। আমরা তো আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না। তবে রাস্তা-ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করার সুযোগ নেই। পুনরায় সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। যতবার দখল করবে, ততবার তাদের উচ্ছেদ করা হবে।’
আরএম