কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক সাইফুল আলম লিমনের মুক্তির দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের একাংশ। শনিবার (৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দাবি জানানো হয়। ইকবাল হোসেন টিপু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে সাবেক সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীনের গ্রুপেরও শীর্ষ নেতা।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াত-শিবির বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সম্পাদক সাইফুল আলম লিমনকে গত ৫ নভেম্বর মধ্যরাতে তার নিজ বাসা থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ গ্রেফতার করে। আগের কোনো মামলা ও বিনা ওয়ারেন্টে ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অস্ত্র মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার দেখায়। চবি ছাত্রলীগ এই ষড়যন্ত্রের ও মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। পাশাপাশি আমরা সাইফুল আলম লিমনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করি।’
লিমনকে মুক্তি দেওয়া না হলে আন্দোলন করার কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিদাতারা হলেন ইকবাল হোসেন টিপু, মিজানুর রহমান বিপুল, আমির সোহেল, রকিবুল হাসান দিনার, ইমাম উদ্দিন ফয়সাল পারভেজ, প্রদীপ চক্রবর্তী দূর্জয়, মো. পারভেজ, আবু বক্কর তোহা, মইনুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম সাইদ, তারেক আহমেদ মিজু, শামসুজ্জামান সম্রাট, রাজু মুন্সি, মুজিবুর রহমান, অনুপম রুদ্র, মো. শাওন, নুর মোহাম্মদ আরজু, এ কে রনি সরকার।
উল্লেখ্য, বিবৃতিদাতা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সম্পূর্ণ সাজানো ও প্রেসক্রাইভড একটা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর আবেগের নেতা সাইফুল আলম লিমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সামনে যুবলীগের কমিটি হবে। সে কমিটির আগে লিমন ভাইয়ের রাজনৈতিক অবস্থানকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ আমরা তার মুক্তির দাবির পাশাপাশি চট্টগ্রাম কারাগারে ছাত্রনেতা হিসেবে লিমন ভাইয়ের যেন সুযোগ-সুবিধা যেন নিশ্চিত করা হয় সে দাবি জানাচ্ছি।’
এর আগে শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত একটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর মেহেদীবাগ এলাকার ইকুইটি টাওয়ারের বাসায় অভিযান চালিয়ে নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল লিমনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম নতুন আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় অতিরিক্ত চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহিউদ্দিন মুরাদের আদালতের সামনে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যা মামলার আসামি মোক্তারকে মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তার উপস্থিতি না থাকলেও সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে।
এছাড়া সিআরবি ডাবল মার্ডার ছাড়াও সাইফুল আলম লিমন বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা রয়েছে। এসব মামলায় জামিনে থাকলেও সজল দাশ নামে লিমনের এক সহযোগীর কাছ থেকে বিদেশি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা অস্ত্র মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। মামলাটি নগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের হলেও মামলার তদন্ত করবে গোয়েন্দা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪ জুন সিআরবি সাত রাস্তার সামনে যুবলীগের বিকর্কিত নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে যুবলীগের কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও শিশু আরমান (৮) নিহত হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় লিমনকে দ্বিতীয় প্রধান আসামি করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। সেসময়ও গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেন লিমন। এরপর ২০১৫ সালের নভেম্বরে অস্ত্রগুলিসহ লিমনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব।
এমএফও