গায়ে হঠাৎ ধাক্কা মারে তরুণী, ইশারা পেতেই ঘিরে ধরে ছিনতাইকারীরা

ছিনতাইয়ের অভিনব কৌশল

শুক্রবার দুপুর একটা। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক যুবক। এ সময় এক মহিলার গায়ে হাল্কা ধাক্কা লাগে। ঠিক ধাক্কা বলা যাবে না, অনেকটা কৌশলে মহিলা নিজেই ওই যুবককে ধাক্কা দেয়। সেকেন্ডের মধ্যে চার-পাঁচজন বখাটে যুবক এসে ওই যুবককে ঘিরে ধরে। সে কিছু বুঝতে উঠার আগেই মহিলা উধাও। এক পর্যায়ে ওই যুবককে বখাটেরা টেনে রাস্তার একপাশে নিয়ে যায়। তারপর পকেটে থাকা টাকা, মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে এই পথে যেন আর হাঁটে ধমক দিয়ে চলে যায় বখাটের দল।

না, এটা কোনও গল্প নয়। চকরিয়া পৌরশহরের রাস্তা-ঘাটে চলমান ঘটনা। এ রকম হরহামেশা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন চকরিয়া পৌরশহরে সাধারণ মানুষ। সম্মানের ভয়ে যা মুখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছেন তারা।

এসব দুর্বৃত্তদের খপ্পরে পড়ে সাধারণ লোকজন হারাচ্ছে টাকা, মোবাইলসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র। বিশেষ করে চকরিয়া পৌরশহরের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে এই অভিনব প্রতারণার ঘটনাগুলো ঘটছে। কিন্তু প্রতারক চক্র থাকছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

প্রতারণার শিকার ৩৫ বছর বয়সী যুবক আবুল কাশেম (ছদ্মনাম) বলেন, কয়েকদিন আগে চকরিয়া পৌরশহরের ওয়াপদা সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। এ সময় এক মহিলা আমার গায়ে ধাক্কা দেয়। কিন্তু মহিলাটি উল্টো আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে। পরে দেখি আরও চার-পাঁচজন যুবক এসে হাজির। তারও আমার সঙ্গে তর্কাকর্কি শুরু করে। আমি অনেকটা হতবাক হয়ে পড়ি। বুঝতে পারছিলাম না আসলে কি হচ্ছে। পরে ওসব বখাটেদের হাত থেকে বাঁচতে নিরবে পকেটে যা টাকা ছিল দিয়ে দিয়েছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরশহরে মহিলা ও পুরুষ সদস্যদের বেশ কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় অভিনব কায়দায় সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা, মোবাইলসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হাতিয়ে নিচ্ছে। পৌরশহরের সড়ক ওয়াপদা সড়ক, বালিকা বিদ্যালয় সড়ক, বালক উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, হাসপাতাল সড়ক, বিমানবন্দর সড়ক, বাঁশঘাটা সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে প্রায় প্রতিদিন এমন প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতারক দলের সদস্যরা এসব সড়কে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বসে থাকে। এলাকায় নতুন কোন লোকজন দেখলেই তাদের টার্গেটে পরিণত হয়।

স্থানীয়রা জানান, পৌরশহরের এ রকম বহু প্রতারক চক্র রয়েছে। তারা যে শুধু মহিলাদের দিয়ে প্রতারণা করে তা না। সুযোগ বুঝে তারা চুরি-ছিনতাইও করে। প্রতারণার কাজে মহিলা ব্যবহার করায় অনেকে মান-সম্মানের ভয়ে থানায়ও যায় না। যার কারণে ওইসব প্রতারক চক্র ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

সাদা পোষাকের পুলিশ বাহিনী দিয়ে যদি এসব সড়কগুলোতে নজনদারি বাড়ানো যায় তবে এসব ঘটনা বন্ধ হবে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ‘এ ধরনের কিছু বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা আমরা জেনেছি। অচিরেই পৌরশহরের এসব সড়কে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হবে।’

এসএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!