গায়ত্রীকে প্রথম চুমোর পরদিনই শরীরী সম্পর্কে জড়ান বাবুল আক্তার

বাবুলের সিমে গায়ত্রীর ২৯টি এসএমএসের খোঁজ পান মিতু

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে বাবুল আক্তারের সাথে ২০১৩ সালে পরিচয় হয় সেখানে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তা গায়ত্রী অমরসিংয়ের। একসময় সেই গায়ত্রীর সাথে প্রণয়ে জড়িয়ে পড়েন বাবুল আক্তার। একসময় সেই খবর পৌঁছে যায় স্ত্রী মিতুর কানেও। শুরু হয় অশান্তির ঢেউ। এই প্রণয়ের জের ধরেই প্রাণ গেল বাবুলপত্নী মিতুর। ইতি ঘটে চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের ক্যারিয়ারেরও।

কে এই গায়ত্রী? মিতু হত্যার ঘটনায় মিতুর পিতা মোশাররফ হোসেনের করা নতুন মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গায়ত্রী অমর সিং একজন ভারতীয় নাগরিক। তিনি জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার—ইউএনএইচসিআর-এর ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন কক্সবাজারে।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০১৪ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাবুল আক্তার সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে থাকাকালে প্রথমবার গায়ত্রীর সাথে বাবুলের সম্পর্কের কথা জানতে পারেন স্ত্রী মাহমুদা মিতু। ওই সময় বাবুল আক্তার তার মোবাইলের সিমটি দেশে রেখে যান। আর বিভিন্ন সময়ে গায়ত্রী মোট ২৯টি এসএমএস পাঠান বাবুল আক্তারের সিমে। পরে প্রতিটি এসএমএসই হাতে লিখে নোট করে রাখেন মিতু।

এছাড়া বাবুল আক্তারকে গায়ত্রীর উপহার দেওয়া দুটি বই ‘TALIBAN’ ও ‘Best kept secret’ নামে দুটো বইও হাতে আসে মিতুর।

যার মধ্যে ‘TALIBAN’ বইয়ের শেষ প্রচ্ছদের আগের পাতায় বাবুল আক্তার নিজ হাতে গায়ত্রীর সাথে পরিচয় ও সম্পর্কের নানা খুঁটিনাটি তথ্য নোট করে রাখেন।

সেই নোট অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর গায়ত্রীর সাথে প্রথম দেখা হয় বাবুলের। একে অপরকে প্রথমবার চুমো খান ৫ অক্টোবর। এর দুদিন পর ৭ অক্টোবর দুজনের মধ্যে প্রথম শারীরিক সম্পর্ক হয়। দুজনে প্রথমবারের মত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে হাঁটেন ৮ অক্টোবর। এসব তথ্যের সাথে ১০ অক্টোবর গায়ত্রীর জন্মদিনের তথ্যও ওই পাতায় নোট করে রাখেন বাবুল আক্তার।

বাবুলের স্ত্রী মিতুর পিতা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার এজাহার থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গায়ত্রী এখন কোথায় আছে এই বিষয়ে মামলার এজহারে কিছু উল্লেখ না থাকলেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে বর্তমানে তিনি উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের রাষ্ট্র নেদারল্যান্ডসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর রটারডামে রয়েছেন। সেখানেও তিনি ইউএনএইচসিআর-এর লিগ্যাল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন।

এদিকে বুধবার (১২ মে) বেলা দুইটার দিকে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে মিতু হত্যার ঘটনায় নতুন মামলা দায়ের করা হয়। মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেন, মিতুকে হত্যার আগে গায়ত্রীর মুঠোফোন থেকে মিতুকে এসএমএস করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

তবে নতুন মামলায় গায়ত্রীকে আসামি করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন,‘তিনি হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু এই হত্যা প্রক্রিয়ার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন কি-না তা আমাদের জানা নেই। হুমকির বিষয়টি এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তদন্ত কর্মকর্তাই আসামি হিসেবে তার নাম যোগ করতে পারবেন।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!