গরুর পেটে যাচ্ছে চট্টগ্রাম-ঢাকার তারকা হোটেলের কোটি টাকার সবজি

চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন তারকা হোটেল ও রেস্টুরেন্টে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বগুড়ার বিভিন্ন গ্রামে উৎপাদিত বিদেশি জাতের দামি সবজি এখন গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে উৎপাদিত সবজি সরবরাহ করা হতো চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন তারকা হোটেল ও রেস্টুরেন্টে। কিন্তু করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন তারকা হোটেল ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবজি উৎপাদকরা বিপাকে পড়ে যায়। বিদেশিদের পাশাপাশি বাঙালিদের বিদেশি খাবারের স্বাদ দিতে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠা রেস্তোরাঁ এসব সবজির বড় ক্রেতা হলেও করোনার কারণে বড় বড় হোটেল আর রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় আর বিক্রি হচ্ছে না বিদেশি সবজি। এ অবস্থায় গ্রামে গরুকে খাওয়ানো হচ্ছে বিদেশি সবজি।

গরুর পেটে যাচ্ছে চট্টগ্রাম-ঢাকার তারকা হোটেলের কোটি টাকার সবজি 1

বগুড়ার শিবগঞ্জের গ্রামে উৎপাদিত হয় রপ্তানিযোগ্য সুইট কর্ন, লেটুসপাতা ও দেশি-বিদেশী তুলসীসহ নানা ধরনের প্রায় কোটি টাকার সবজি। শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলায় বিদেশি বড় সবজির উৎপাদনকারী মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরও কয়েকজন চাষী গত প্রায় দুই দশক ধরে চাষ করছেন থাই আদা, কারি পাতা, বিট, এসপারাগাস, লেমন গ্রাসসহ দেশি-বিদেশি তুলসী, সুইট কর্ন, চাইপস বা নীলার মতো আরও অনেক সবজি।

শিবগঞ্জ এবং গাবতলী দুই উপজেলায় মোট সাড়ে ২২ বিঘা জমিতে বিদেশি সবজি উৎপাদন করেন মোস্তাফিজার রহমান। এর মধ্যে ৮ বিঘা জমিতে থাই আদা এবং ৮ বিঘা জমিতে সুইট কর্ন লাগিয়েছেন। এগুলো বাজারজাত করার সময় পেরিয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। জমিতেই নষ্ট হচ্ছে ফসল। সরবরাহ করতে না পারায় নেই আয়ও। তাই এসব সবজি কেটে ফেলে দেয়ার লোকও নিতে পারছেন না। কারণ শ্রমিক নিলেই দিতে হবে পারিশ্রমিক।

মোস্তাফিজার রহমান বললেন, ‘শুধু সুইট কর্নেই আমার ক্ষতি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। জমিতে থেকেই নষ্ট হয়ে গেল। কাটার জন্য মানুষ নিলে তাকে তো আবার পয়সা দিতে হবে। তাই গ্রামের মানুষদের বলেছি, তারাই যেন কেটে নিয়ে গিয়ে গরুকে খাওয়ায়। তাও আমার জমিটা পরিস্কার হোক। গ্রামের মানুষ করছে তাই। বছরে অন্তত কোটি টাকার সবজি যায় বড় বড় হোটেল রেস্তোরায়। করোনার কারণে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার সবজি খাচ্ছে গরু। এসব সবজির যেমন দাম, তেমনি বীজেরও দাম অনেক বেশি। তাই এই সময়টায় পুরো শেষ। আমরা এসব সবজি উৎপাদন করে কোটি কোটি টাকা বাঁচিয়ে দিচ্ছি দেশের। নইলে এইসবই আমদানি করতে হতো। সেই হিসাবে আমরাও রেমিটেন্স আনার কাজ করছি। সরকারের উচিত আমাদের দিকেও নজর দেওয়া।’

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড অবলম্বনে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!