গণঅভ্যুত্থানে চট্টগ্রামে নিহত ১৩, খসড়া তালিকায় সারা দেশে ৭০৮ জন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের সরকারি তালিকায় প্রাথমিকভাবে ৭০৮ জনের পরিচয় জমা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহত্তর চট্টগ্রামে নিহতদের মধ্যে ১৩ জনের বিস্তারিত পরিচয় জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে চট্টগ্রামের সাতজন ছাড়াও কক্সবাজারের তিনজন এবং খাগড়াছড়ি, বরিশাল ও নারায়ণগঞ্জের একজন করে রয়েছেন। এ সংখ্যা পরবর্তী সময়ে আরও বাড়তে পারে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব উম্মে হাবিবার সই করা গণবিজ্ঞপ্তিতে এ খসড়া তালিকার তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টে (২০২৪) সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও জেলা পর্যায় থেকে সংগৃহীত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহতদের নামের খসড়া তালিকা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ওয়েবসাইট এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। তথ্য সংশোধন বা সংযোজন করার জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকাটি ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

চট্টগ্রামে নিহত যে ১৩ জনের বিস্তারিত পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন— চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ বার্মা কলোনির মোহাম্মদ আব্দুছ ছোবহানের ছেলে মোহাম্মদ আলম, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার কড়িয়ার দিঘীর পাড় শামসু কোম্পানির বাড়ির মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে জামান উদ্দিন, লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ দর্জিপাড়ার নুরুল হকের ছেলে ইসমাদুল হক, লালখানবাজার হাই লেভেল রোডের কালামিয়ার বাড়ির দুলালের ছেলে শহীদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার রসুলবাগ আবাসিক এলাকার রিপনের বাড়ির রফিকুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া ইউনিয়নের হাজী দেলোয়ার হোসেন সওদাগর বাড়ির নুরুল আবছারের ছেলে ওমর নুরুল আবছার, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ড হারামিয়ার মৃত আমিন রসুলের ছেলে মাহিন হোসেন সাইমুন।

এছাড়া রয়েছেন কক্সবাজার পেকুয়া সদরের ৯নং ওয়ার্ডের শফিউল আলমের ছেলে মোহাম্মদ ওয়াসিম, মহেশখালী কালামারছড়ার বাদশা মিয়ার ছেলে তানভীর ছিদ্দিকী, চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হেলাল উদ্দিনের ছেলে আহসান হাবিব।

নিহতদের মধ্যে আরও রয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় ৩ নং ওয়ার্ডের রসুলপুরের আমিন মিয়ার ছেলে মজিদ হোসেন।

চট্টগ্রামে নিহতদের মধ্যে আছেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের জাকির আহমেদের ছেলে ফয়সাল আহমেদ শান্ত এবং নারায়ণগঞ্জ চিটাগং রোড পাইনাদীর মৃত সেলিম মাতুব্বরের মেয়ে সুমাইয়া সুমির নামও।

এদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, তালিকায় প্রকাশিত নাম, ঠিকানা ও অন্য প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি যাচাই/সংশোধন/পূর্ণাঙ্গ করতে নিহতদের পরিবারের সদস্য/ওয়ারিশ/প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হলো। প্রকাশিত তালিকার বিষয়ে কারও কোনো মতামত, পরামর্শ এবং নতুন কোনো তথ্য-উপাত্ত সংযোজন করার মতো থাকলে তা সেবা নেওয়া সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল অথবা নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে জানাতে অনুরোধ করা হলো।

প্রকাশিত তালিকার তথ্য সংশোধনের জন্য নিম্নরূপ পদক্ষেপ নিতে হবে—
ক. নিহত পরিবারের সদস্য/ওয়ারিশ/প্রতিনিধিদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)/ জন্মনিবন্ধন ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
খ. রেজিস্ট্রেশনের পর নিহত ব্যক্তির তথ্য ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে হবে।
গ. প্রিন্ট করা কাগজের যে ঘরগুলোতে তথ্য নেই, সেগুলো পূরণ করতে হবে।
ঘ. পূরণকৃত তথ্য নিয়ে সেবা গ্রহণকৃত সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল অথবা নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তথ্য সংশোধনে সহায়তা করবে।
ঙ. প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিহত পরিবারের সদস্য/ওয়ারিশ/প্রতিনিধি কর্তৃক পূরণকৃত ফরমটি জমা নিয়ে অনলাইনে তথ্যগুলো হালনাগাদ করবেন।
চ. দাখিলকৃত তথ্য যথাযথভাবে সন্নিবেশিত বা সংশোধিত হলো কি না তা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে পুনরায় যাচাই করা যাবে।

তবে কোনো শহীদের নাম–তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না হয়ে থাকলে শহীদ পরিবারের সদস্য, ওয়ারিশ বা প্রতিনিধি উপযুক্ত প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বা সিভিল সার্জন বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতার সঙ্গে যোগাযোগ করা অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm