ফসিউল আলম তাসকিন গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন নিজের গন্তব্যে। যাওয়ার পথে হঠাৎ নগরীর দক্ষিণ খুলশী এলাকার এক নম্বর রোডের সৈয়দ ভিলা থেকে মাটির তৈরি বড় ফুলের টব পড়ে। তাসকিন প্রাণে বেঁচে গেলেও বহুতল ভবনের ওপর থেকে পড়া ফুলের টবের আঘাতে তার গাড়ির ওপরের অংশ ভেঙে যায়। তাসকিন বলেন, আরেকটু এদিক ওদিক হলেই বড় বিপদ হতে পারতো।
এরপর তাসকিন ঘটনাস্থলের পাশে ওই ভবনের সপ্তম ও অষ্টম তলায় ফুলের টব দেখতে পান। পরে সেখানকার বাসিন্দারা ফুলের টবটি ‘নিজেদের নয়’ বলে দাবি করে।
সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুর একটার সময় এই ঘটনা ঘটে।
প্রতক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর ধারণা সপ্তম তলা থেকেই পড়েছে এই টব। এছাড়া রাস্তার পাশে অন্য কোনো ভবনে ফুলের টব নেই। যদিও সপ্তম তলার বাসিন্দা রেহেনা বেগম সেটি মানতে নারাজ। তিনি ছিটকে পড়া ফুলের টবটি নিজেদের নয় দাবি করে। বাসা থেকে ডেকে ডিস্টার্ব করেছেন বলে উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষীকে গালিগালাজ করেন।
জানা গেছে, রেহেনা বেগম চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য।
স্থানীয়রা বলছেন, গাড়িতে না পড়ে যদি কোন মানুষের গায়ে পড়তো, তাহলে নিশ্চিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটতো। রাস্তার পাশের ভবনে ঝুঁকিপূর্ণভাবে টব রাখা ও দুঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী তাসকিন খুলশী থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বাসা থেকে মুরাদপুর যাওয়ার পথে সৈয়দ ভিলা থেকে একটি ফুলের টব এসে আমার গাড়িতে পড়ে। এতে গাড়ির ছাদ, সানরুফ ও মনোরুফ ভেঙে যায়। এ সময় আশেপাশের লোকজন ও ভবনের অন্য বাসিন্দারা আসলেও সপ্তম তলার ভদ্র মহিলাকে (রেহেনা বেগম) ডাকার পরেও ঘটনাস্থলে আসেনি। প্রায় এক ঘন্টা পর এসে তিনি নিরাপত্তারক্ষীকে কেন ডাকা হয়েছে জানতে চেয়ে গালিগালাজ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভদ্রমহিলা তখন বলেছিলেন ঘটনার সময় তিনি ঘুমিয়েছিলেন। আবার বলেছেন তিনি নামাজরত ছিলেন। এ বিষয়ে তিনি জানেন না। পরে আবার বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি জেলা পরিষদে ছিলেন। তিনি যদি এটির সাথে জড়িত না হন, তাহলে একেক সময় একেকরকম কথা বলছেন কেন?’
রেহেনা বেগম নামের ওই মহিলা নিজেকে আনোয়ারা উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ও ক্লিফটন গ্রুপের মালিক এমডিএম কামাল উদ্দিন তার বড় ভাই বলে পরিচয় দেন।
তাসকিন বলেন, ‘এ পর্যায়ে বুঝতে পারা যায় যে, রেহানা বেগম একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তিনি ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। অনুমান করা যায় যে, প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে নিরপেক্ষ তদন্ত ব্যাহত হতে পারে।’
জানতে চাইলে খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘সম্ভাব্য কোন্ কোন্ জায়গা থেকে এই টব পড়তে পারে সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
আরএম/সিপি