খুলছে কারখানা, পথে পথে দুর্ভোগ সঙ্গী করে চট্টগ্রামে ফিরছে মানুষ

গার্মেন্টসসহ সব শিল্পকারখানা খুলে যাচ্ছে রোববার (১ আগস্ট) সকাল থেকে। তাই তার আগেই যেভাবেই হোক পৌঁছাতে হবে কর্মস্থলে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে সকালে হালকা নাস্তা খেয়ে ঘর থেকে বের হন পোশাকশ্রমিক শারমিন আকতার। চকরিয়া থেকে রওনা দিয়ে একের পর এক তাকে বদলাতে হয় কখনও পিকআপ, কখনও মাইক্রোবাস, কখনওবা সিএনজি অটোরিকশা। এমনকি একপর্যায়ে ভ্যানে করেও বাড়তি ভাড়া দিয়ে আসতে হয়েছে চট্টগ্রামের আনোয়ারার কালাবিবি দীঘির মোড় এলাকায়। এসে পড়তে হয়েছে আরেক দুর্ভোগে। মাঝপথে গাড়িচালক নামিয়ে দিয়েছেন মোবাইল কোর্টের ভয়ে। তাই পায়ে হেঁটে চাতরী চৌমুহনী বাজার পেরিয়ে যাচ্ছিলেন শহরের উদ্দেশ্যে। পথে জিজ্ঞেস করতেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে শারমিন আকতার বললেন, ‘ঈদের আগেও লকডাউন দিয়ে কষ্টে ফেলে দিয়েছে আমাদের মত গরিবদের। কোরবানির ঈদের পর কারখানা খুলে দিয়ে এবার লকডাউনে দিচ্ছে দুর্ভোগ।’

তিনি বলেন, ‘এতটুকু পর্যন্ত আসতে বিভিন্নস্থানে পড়তে হয়েছে পুলিশের চেকপোস্টেও। তারপরও কাল রোববার যেভাবে হোক অফিসে যেতে হবে। এখানে এসে গাড়ি চালক নামিয়ে দিয়েছেন মোবাইল কোর্টের ভয়ে। একটা গাড়িও যাচ্ছে না। তাই হাতের ভারী ব্যাগ নিয়ে পায়ে হেঁটে যাচ্ছি। জানি না কপালে কী আছে?’

গার্মেন্টসসহ রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসার পর কর্মস্থলের উদ্দেশে ছুটছেন কর্মজীবী মানুষ। বৃষ্টি উপেক্ষা করে পিকআপ, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ ভ্যানে গাদাগাদি করে ছুটতে দেখা গেছে কর্মজীবী মানুষদের। এই যাত্রীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না। অনেকেরই মুখে ছিল না মাস্ক।

এছাড়া গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া। এমনই চিত্র চোখে পড়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার কালাবিবি দীঘির মোড়, চাতরী চৌমুহনী বাজার, বন্দর কমিউনিটি সেন্টার, বটতলী, আনোয়ারা সদর ও কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যারটেক এলাকাসহ বিভিন্ন সড়কে।

শনিবার (৩১ জুলাই) বিকাল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার কালাবিবি দীঘির মোড়ে মোবাইল কোর্ট বসলে গাড়িচালকরা একটু আগেই যাত্রীদের নামিয়ে দেন। এ সময় পায়ে হেঁটে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতেও দেখা যায়। আর পোহাতে হয় নানান ভোগান্তিও।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তানভীর হাসান চৌধুরী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১৯টি মামলায় ৯ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করেছেন বলে জানিয়েছেন।

মোটরসাইকেলে যাত্রী বহনকারী হাফিজুর রহমান নামে এক চালক বলেন, লকডাউনে বন্ধ ছিল অফিস। আজ চলে যেতে হচ্ছে, তাই যাওয়ার সময় দুজন যাত্রীও নিলাম মইজ্জ্যারটেকের। ২০০ টাকা করে ৪০০ টাকায়। লকডাউনে পড়ে গেছি বিপাকে।

কেএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!