খাবার বিতরণের ব্যাখ্যা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে ইসকন

চট্টগ্রামের ১০টি স্কুলে ইসকন প্রবর্তক শ্রী কৃষ্ণ মন্দির কর্তৃক হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ফুড ফর লাইফের খাবার বিতরণের ব্যাখ্যা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে ইসকন। এই খাবার বিতরণ নিয়ে অনভিপ্রেতভাবে কেউ যদি দুঃখ পেয়ে থাকেন তার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে ইসকনের পক্ষ থেকে। এ ব্যাপারে অবহিত করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনারের কাছে সংস্থার পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাতে ইসকন প্রবর্তক শ্রী কৃষ্ণ মন্দির সাধারণ সম্পাদক দারুব্রহ্ম জগন্নাথ দাশ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সম্প্রতি চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে ইসকন ফুড ফর লাইফের খাবার বিতরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক প্রচার চালানো হচ্ছে। মূলত ইসকন রথযাত্রা উপলক্ষে মহানগরের ১০টি স্কুলে হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। রথযাত্রার শুভেচ্ছা হিসেবে প্রতি বছরই এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু এই কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষে কার্যক্রম সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করা হয় ইসকনের ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

হিন্দু ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বিতরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার শুধুমাত্র একটি স্কুলে হিন্দু ছাত্রছাত্রীরা ‘হরে কৃষ্ণ’ মন্ত্র বলেছে। ইসকন শুধুমাত্র হিন্দুদের মাঝেই ধর্মীয় প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। পাশাপাশি সব ধর্মমতের প্রতি ইসকন শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশের প্রচলিত সাংবিধানিক রীতিনীতি, আইনকানুন এবং সকল ধর্মের প্রতি বাংলাদেশ ইসকন সর্বদা শ্রদ্ধাশীল।

ইসকন বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তাদের আচরণে অনভিপ্রেতভাবে কেউ যদি কেউ যদি দুঃখ পেয়ে থাকেন বা কারো মনে আঘাত লেগে থাকে সে জন্য ইসকন দুঃখ প্রকাশ করছে। ভবিষ্যতে আরো সতর্কতার সাথে ইসকন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ইসকন নামে একটি সনাতনধর্মীয় সংগঠন চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে প্রসাদ খাইয়ে শিক্ষার্থীদের ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ মন্ত্র পাঠ করার ঘটনাকে ‘অন্যায়’ বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি উঠা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন নজরে আনার পর আদালত এ মন্তব্য করেন। তৈমুর আলম এসময় প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান এবং বলেন, এক ধর্মের রীতি-নীতি অন্য ধর্মের মানুষের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া আমাদের সংবিধান সমর্থন করে না।

তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘একটি এনজিও কোনও স্কুলে খাবার বিতরণ করতে পারে। কিন্তু জোর করে বা প্রলোভন দেখিয়ে যদি প্রসাদ খাইয়ে মন্ত্র পাঠ করিয়ে থাকে, তবে সেটা অন্যায়।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!