সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপসহ একাধিক মন্ত্রণালয়ের কঠোর সমালোচনা করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেন, ‘১৯৭৪ সালের যে সিকুইন্সগুলো প্রিভেন্স করছিল, সেই সিকুইন্স এখন তারা শুরু করেছে। সরকারের ভেতরে কারা সরকার বানানোর চেষ্টা করছেন? কারা সরকারের সফলতাগুলো আজকে জবাই করে জনগণ আর সরকারের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করছে? তাদের বিরুদ্ধে যদি এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে আমাদেরকে অনেক বড় মূল্য দিতে হবে।’
পাকিস্তানের ইমরান খানের ক্ষমতা হারানোর কথা উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, ‘ইমরান খান রাত্রে বেলায় ঘুমিয়ে গেছেন, সকালে উঠে দেখে উনার তক্তা (চেয়ার) নেই।’
সোমবার (৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় সুজন এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘তেলের দাম বেড়েছে ঠিক আছে। কিন্তু হঠাৎ করে যে আপনি ৫২ শতাংশ বাড়াবেন এইটার পরের সিকুইন্স কি হবে? গাড়িভাড়া নিয়ে গণ্ডগোল হবে তাহলে পরিবহনওয়ালাদের সঙ্গে একটা বুঝপারা করে রাখার দরকার ছিল। তাহলে পরেরদিন যে ঘটনাটা হলো গাড়ি বন্ধ করে দিল, কেন ওরা গাড়ি বন্ধ করবে? ৬০ শতাংশ গাড়ি চলে গ্যাসে, তেলের মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে, গ্যাসের কি সমস্যা? কেন তারা গাড়ি বন্ধ করবে? অলংকারের সামনে যারা গাড়ি বের করেছে, তাদেরকে নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে। পুলিশ একটাও হস্তক্ষেপ করে নাই। তাহলে কি আমরা অরাজকতাকারীদের সহযোগিতা করতেছি?’
সুজন বলেন, ‘ওইদিন গুচ্ছ পরীক্ষা ছিল। এতে ৩০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে যেতে পারে নাই, রেলের পরীক্ষা ছিল, অনেকদিন পর সেই পরীক্ষা হয়েছে, নিয়োগ পরীক্ষা। সেখানে অনেক লোক যোগদান করতে পারে নাই। মানুষ পথে পথে আটকে পড়ে আছে। তাহলে কেন আজকেও ভাড়া একবার বলে ২০ পয়সা, একবার বলে ৪০ পয়সা। এখন প্রত্যেক মোড়ে মোড়ে দেখেন পরিবহন শ্রমিকদের সাথে পাবলিকের মারামারি চলছে। তাহলে আমাদের যানবাহন মন্ত্রণালয়ের লোকজন কোথায়? আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোথায়? তাহলে সরকারের ভেতর কি আরেকটা সরকার পয়দা হচ্ছে?’
বাণিজ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কালকে মাত্র প্রস্তাব দিল ২০ টাকা করে লিটারে সয়াবিনের তেলের দাম বাড়ানোর জন্য। সাথে সাথে তেলের দাম বেড়ে গেছে তাহলে সরকারের প্রজ্ঞাপন এর জন্য দেরি করে নাই, তাহলে আরেকটা সরকার এর জন্য তৈরি হয়ে বসে আছে। এরা কারা? ঈদের দিন যারা সয়াবিন তেল লুকিয়ে ফেলল, এদের বিরুদ্ধে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? আজকে বাণিজ্য মন্ত্রীকে আমি বলব, আপনি স্মার্টলি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। যারা যারা মন্ত্রণালয়ে গিয়ে বসে আছেন, মন্ত্রণালয়েকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না, তারা পদ ছেড়ে দেন। আর এই তেলের ব্যবহার কমানো, বিদ্যুতের ব্যবহার কমানো, এগুলো নিয়ে একটা জাতীয় নীতি প্রণয়ন করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘একেকজন মন্ত্রী, সচিব, প্রতিমন্ত্রী, উপসচিব, এডিশনাল সেক্রেটারি বিভিন্ন স্বায়িত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ দেখা যাচ্ছে, তাদের জন্য একটা গাড়ি, তাদের স্ত্রীর জন্য একটা গাড়ি, তাদের ছেলের জন্য একটা গাড়ি, তাদের মেয়ের জন্য একটা গাড়ি। তাহলে এখানে নীতিমালা আনতে হবে শুধুমাত্র সরকারি কাজের সময় ছাড়া অন্য কোনো সময় তারা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবে না। তাহলে তেলের খরচ কমে আসবে। তেলের খরচ কমানোর ব্যবস্থা করেন, দুর্নীতি কমান। তাহলে আমার মনে হচ্ছে মানুষের ওপর চাপটা কম পড়বে।’
আরএম/ডিজে