কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের পটিয়ায় গরু চোর চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। উপজেলা ও পৌরসদরের বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই ঘটছে গরু চুরির ঘটনা।
সূত্র জানায়, গত একমাসে বিভিন্ন কৌশলে গরু চুরির ঘটনায় দশজন চোর গ্রেপ্তার ও চারটি গরু উদ্ধার করেছে পটিয়া থানা পুলিশ। এছাড়া মালিক খুঁজে না পাওয়ায় বর্তমানে থানায় একটি গরু ও একটি মহিষ নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ।
জানা যায়, পটিয়া উপজেলার জিরি ইউনিয়নের আল ওয়ালী এগ্রো ফার্ম থেকে ছয়টি গরু (ষাড়) চুরির পর থেকে খামারিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। গরু চোরের ভয়ে খামারি ও এলাকার লোকজন রাতে বিভিন্ন এলাকায় পাহারা দিচ্ছেন। পাশাপাশি গরু চোরদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। সম্প্রতি পুলিশের হাতে আটক হওয়া আল ওয়ালী খামারের নৈশপ্রহরীর কাছ থেকে পাওয়া গেছে গরু চোরের চাঞ্চল্যকর তথ্য। গরু চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন খোদ গরু ব্যবসায়ীর পুত্র তৌহিদ।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরাকান মহাসড়কটি পটিয়া উপজেলা সদর দিয়ে যাওয়ার কারণে চোরেরা গরু চুরি করে তা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে।
আসন্ন কোরবানি ঈদে বিক্রি করার জন্য পটিয়ার জিরি ইউনিয়নে আল ওয়ালী খামারে ২৩টি গরু মোটাতাজা করেন। তারা আনোয়ারা উপজেলার বরুমছড়া এলাকার গরু ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাকের কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে গত ২৫ মে ১৪টি গরু ১৬লাখ ৬০হাজার টাকায় মৌখিক চুক্তিতে ক্রয় করেন। এর মধ্যে ১০ লাখ ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু গত ঈদের আগের দিন আরো সাড়ে তিন লাখ টাকা পরিশোধ করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু হঠাৎ করে ঈদের পর দিন রাতেই খামারের ১২ লাখ টাকার মূল্যের ছয়টি ষাড় গরু চুরি হয়। বিষয়টি খামারিরা থানায় অভিযোগ করার পর পুলিশ নৈশপ্রহরী মো. ইসহাককে আটক করে। নৈশপ্রহরী জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে রাতে ছয়টি গরু আবদুর রাজ্জাকের পুত্র তৌহিদ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গাড়ি করে নিয়ে গেছে। বর্তমানে নৈশপ্রহরী ইসহাক ও গরু ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাকের পুত্র তৌহিদ জেলও খেটেছেন।
খামারি আমদুর রহমান আনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ করে পটিয়ায় গরু চুরি বেড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও ১৫ দিনেও তাদের গরু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।’
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গরু চোরদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। ইতোমধ্যে একজন নৈশপ্রহরী, গরু ব্যবসায়ীর পুত্রসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে থানায় একটি গরু ও একটি মহিষ রয়েছে। মালিক খোঁজে না পাওয়ায় পুলিশ এসব গরু ও মহিষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। চুরি বন্ধে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন ওসি বোরহান উদ্দিন।’
এএইচ