কেএসআরএমের আকাশে পিএইচপির ড্রোন (ভিডিওসহ)

দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কেএসআরএমের স্টিল প্ল্যান্ট এলাকায় পিএইচপির ড্রোন উড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে শিল্পমালিকদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় জীবনঝুঁকি সৃষ্টির অভিযোগ এনে কেএসআরএম লিমিটেডের পক্ষ থেকে সীতাকুণ্ড থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তারা বলছেন, এটি গুপ্তচরবৃত্তি ও কারো ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় সরাসরি আঘাতের শামিল।

জানা যায়, সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে কবির গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম স্টিল প্ল্যান্ট লিমিটেডের সীমানায় গত ৭ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করে একটি ড্রোন উড়তে থাকে।

বিকেল চারটায় কারখানা এলাকায় একটি ড্রোনের উড়াউড়ি শনাক্ত করেন নিরাপত্তাকর্মীরা। নিরাপত্তাকর্মীরা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। পাশাপাশি তারা ওই ড্রোনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন। ওই মুহূর্তের ভিডিও ধারণও করা হয়। প্রথম দিকে তারা বিষয়টাকে স্বাভাবিক মনে করলেও পরবর্তীতে তারা দেখতে পান ড্রোনটি অবতরণ করে পিএইচপির মালিকানাধীন পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস কারখানায়।

এ ঘটনাকে কারখানায় কর্মরত কর্মীদের জীবনের ওপর হুমকির শামিল বলে অভিযোগ এনে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের বিপজ্জনক ঘটনায় তাদের অভ্যন্তরীণ ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা যায়, ঘটনার পরপরই কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে অবহিত করে। গত ৮ সেপ্টেম্বর কেএসআরএমের সিকিউরিটি ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম সীতাকুণ্ড থানায় এ নিয়ে একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়।

বিষয়টি স্বীকার করে কেএসআরএম লিমিটেডের জিএম (কারখানা) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এটি এক ধরনের বাড়াবাড়ি। যা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। কোনো বিষয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কেউ অবস্থান নিতে চাইলে মুখোমুখি হলেই পারে। কিন্তু তা না করে চোরের মতো এসব কর্মকাণ্ড সভ্য কোনো ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর কাজ হতে পারে না। বরং এতে তাদের ভদ্রতার আড়ালে থাকা কুৎসিত রূপ প্রকাশ পাচ্ছে। আমাদের কারখানা এলাকায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।’

ঘটনা সম্পর্কে জানতে পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ মহসিনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ওই প্রতিষ্ঠানের ডিজিএম (এস্টেট) আমীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না জানান।

এ প্রসঙ্গে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘কেএসআরএম লিমিটেডের সিকিউরিটি ইনচার্জ এ বিষয়ে একটি ডায়রি করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্তে দায়ী চিহ্নিত করে আইনগত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

যোগাযোগ করা হলে গোয়েন্দা সংস্থার একজন পদস্থ কর্মকর্তাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি কেএসআরএমের একজন প্রতিনিধির কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য উপাত্তও ইতিমধ্যে আমাদের হাতে এসেছে। একটি শিল্প গ্রুপের বিরুদ্ধে অপর একটি শিল্প গ্রুপের এমন আচরণ কাম্য হতে পারে না। কোনো কারখানার নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গুপ্তচরবৃত্তি শুভ লক্ষণ নয়।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!