টানা ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর বেড়ে বিপৎসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে।
রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ৮ টার পর পর কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি স্পিলওয়ে ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯০০০ কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কাপ্তাই পানি বিদুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আবদুজ্জাহের।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে হ্রদের পানির প্রবাহ ও বৃষ্টিপাত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পানির লেভেল অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে স্প্রিলওয়ের গেট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। সব কটি গেট খুলে দেওয়ায় কোনো অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে আবদুজ্জাহের বলেন, এতে করে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এর আগে এর চেয়ে বেশি পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে।
এর আগে কাপ্তাই বাঁধের গেট গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) রাত ১০টায় খোলার কথা থাকলেও তা খোলা হয়নি। প্রত্যাশিত পানির ফ্লো না থাকায় এবং রাতে বাঁধ খোলা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ায় সম্ভাবনাসহ সব দিক বিবেচনা করে তা খোলা হয়নি বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, রোববার সকাল ৭টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৮.২৭ এমএসএল (মিনস সি লেভেল) রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিপৎসীমায় পৌঁছেছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। গেইট খুলে দেওয়ায় এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক ফুট পানি নিষ্কাশন হচ্ছে।
এর আগে হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. মোশাররফ হোসেন খান বলেছেন, কাপ্তাই হ্রদে পানি বর্তমানে বিপৎসীমায় পৌঁছেছে। বাঁধের ঝুঁকি এড়াতে এবং রুলকার্ভ অনুসরণ করে হ্রদের পানি ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর এভাবেই পানি ছাড়া হয়। তাই আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রে দৈনিক পাঁচটি ইউনিটে সর্বোচ্চ ২১৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
এমএহক