ভিডিও/ কাউন্সিলর নিয়ে ‘তামাশা’য় রেগে আগুন মাহতাব, তোপের মুখে ‘বহিরাগতরা’

‘বহু তামাশা, বহু খেলা হয়ে গেছে’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে এবার খোলাখুলি ক্ষোভ ঝাড়লেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রাম সিটির ভোট নিয়ে বহু ‘তামাশা’ হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি এজন্য ‘বহিরাগতদের’ দায়ী করে তাদের নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে মাথা না ঘামাতে হুঁশিয়ার করে দিলেন।

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা এম এ আজিজের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১১ জানুয়ারি) সকালে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এমএ আজিজের বাড়িতে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।

চসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে বহু ‘খেলা’ হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বহু তামাশা হয়ে গেছে, বহু খেলা হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে যেটা হয়ে গেছে ওয়ার্ডভিত্তিক— সেটা চট্টগ্রামের মহানগরের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। যার কারণে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে ঘরে ঘরে। কেন?’

YouTube video

মহানগর আওয়ামী লীগের মাধ্যমে কাউন্সিলর মনোনয়ন দেওয়া হলে এমনটা হতো না দাবি করে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এমন হলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভায় বসে একসাথে বসে একটা সিদ্ধান্ত নিতাম। সেই সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ যেত না, যেতে পারতো না। কেন এমন হলো, কিসের জন্য হলো? কার সুবিধার জন্য হলো?’

এসব কিছুর জন্য ‘বহিরাগতদের’ দায়ী করে নগর আওয়ামী লীগে ‘কোন্দল’ সৃষ্টি না করতে হুঁশিয়ার করে দিয়ে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘একবার ভুল করলে ২০ বছর পিছিয়ে যেতে হবে। তাই বলতেছি সাবধান হয়ে যান। এখানে কোন্দল করবেন না, দলাদলি করবেন না। বহিরাগতরা চট্টগ্রাম মহানগরে এসে মাথা ঘামাবেন না। সাবধান হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। আমি একজন বীরের ফ্যামিলির সন্তান। আমি বেঁচে থাকতে জহুর আহমদ চৌধুরীর সন্তান হিসেবে বলছি কোন বহিরাগত চট্টগ্রাম মহানগরে মাথা ঘামাবেন না।’

সোমবারের এই স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি চট্টগ্রামের মিরসরাই থেকে নির্বাচিত সাংসদ। মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর বক্তৃতার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। সভার শুরুতেই বক্তব্য দিয়ে চলে যান তিনি।

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের আওয়ামী লীগের লেহাজ হচ্ছে এইটা। আমাদের পরিচয় হলো আমরা সর্বহারার মানুষ, আমরা নৌকার মানুষ, আমরা ঠেলাগাড়ির মানুষ (৩৭ নম্বর মুনির নগর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রতীক)। তাই আজকে নৌকার জন্য এখানে এসেছি , ঠেলাগাড়ির জন্য এখানে এসেছি। তাই আজকে বন্ধুরা আমার ভুল করবেন না। নৌকাকে পেছনে ফেলতে গিয়ে ঠেলাগাড়িকে পেছনে ফেলতে গিয়ে ভুল করবেন না। একবার যদি পিছনে ফেলে দেন, তাহলে ২০ বছর চলে যাবে। বেগম খালেদা জিয়া এসেছিল, এরশাদ আমাদের ২০টি বছর নিয়ে গেছে। সেই ২০ বছর আবার পিছনে পড়ে যাব।’

এমএ আজিজের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নগর ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
এমএ আজিজের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নগর ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।

স্মরণ সভায় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, ‘নির্বাচনে সকল শক্তি নিয়ে নেতাকর্মীদেরকে মাঠে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদেরকে কাজ করতে হবে। কোন ধরনের মতানৈক্য ও বিরোধ বিভ্রান্তি রাখা যাবে না। মনে রাখতে হবে প্রার্থী দলের মনোনীত— এই প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের, এই প্রার্থী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। আওয়ামী লীগ যদি সম্মিলিত শক্তি নিয়ে কাজ করে তাহলে বিরোধী কোন শক্তি দাঁড়াতে পারবে না।’

স্মরণসভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য নঈম উদ্দিন আহমেদ, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু প্রমুখ।

এর আগে এমএ আজিজের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm