কলেজে এলে ফরম ফিলআপের টাকা ফেরত পাবে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা

ফেরত মিলবে ৫০০-৬০০ টাকা, বিজ্ঞান বিভাগ একটু বেশি

পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর এবার টাকাও ফেরত পেতে যাচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষায় সদ্য ফল পাওয়া শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, কলেজ থেকে ট্রান্সক্রিপ্ট সংগ্রহ করতে এলে ফরম ফিলআপের সময় নেওয়া কিছু টাকা শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেওয়া হবে। এই অংক ৫০০ থেকে ৬০০ এর মতো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা একটু বেশি টাকা ফেরত পাবে।

এবারের উচ্চমাধ্যমিকে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং তাদের ফরম ফিল আপ বাবদ জমা হয় ৩০০ কোটি টাকা। আর এই টাকার মধ্যে অল্প কিছু টাকা ফেরত পাবে শিক্ষার্থীরা।

২০২০ সালে মহামারি করোনার প্রভাবের কথা চিন্তা করে সরকার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৩০ জানুয়ারি) ঘোষণা করা হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল। যদিও এর আগে সব পরীক্ষার্থীকে অটো পাস ঘোষণা করা হয়।

পরীক্ষা ছাড়া অটো পাসের খুশির মোহ কাটতে না কাটতেই যোগ হয়েছে আরও একটি খুশির সংবাদ। সেটি হচ্ছে ২০২০ সালের যে সকল পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছেন, তারা সকলেই টাকা ফেরত পাবেন।

ফল ঘোষণার পর শনিবার এমন ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সেই খবর শুনে পাসের খুশির সাথে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে শিক্ষার্থীদের মনে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলআপের টাকা থেকে কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’

কেন অল্প টাকা? সম্পূর্ণ টাকা কেন নয়— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা থেকে ইতিমধ্যে উত্তরপত্র তৈরি, কেন্দ্র বুকিং, ফরম পূরণ, এডমিট কার্ড ও সার্টিফিকেটের পেছনে অনেক টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। যে টাকাটা অবশিষ্ট রয়েছে সে টাকাটা কলেজ থেকে ট্রান্সক্রিপ্ট সংগ্রহ করার সময় শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে সেই টাকার অংকটা ৫০০ থেকে ৬০০ এর মতো হতে পারে।’

এই টাকা নিয়ে কোন ধরনের দুর্নীতি করার সুযোগ নেই জানিয়ে প্রফেসর প্রদীপ বলেন, ‘কোন্ বিভাগ কত টাকা পাবে সেটা স্পষ্ট করে বলে দেবো। সুতরাং এতে কোন ধরনের টাকা সংক্রান্ত দুর্নীতি করার সুযোগ নেই।’

তবে অন্যান্য বিভাগের চেয়ে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা একটু বেশি টাকা ফেরত পাবে বলে তিনি জানান। প্রতি বছরের ১ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হলেও করোনার কারণে ২০২০ এ সেটি সম্ভব হয়নি। পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাস দেয়ার সিদ্ধান্ত আসার পর থেকেই রেজিস্ট্রেশনের জন্য নেওয়া ফি ফেরতের দাবি তুলে শিক্ষার্থীরা।

জয়ন্ত চৌধুরী এবার চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন। আর তার আনন্দের মাত্রা আরো একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে টাকা ফেরত পাওয়ার সংবাদ।

জয়ন্ত চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘পাস করছি সেটা একটি খুশির খবর, সাথে টাকা ফেরত পাবো সেটা আরেকটা খুশির খবর। আমি মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। ফরম ফিলআপের টাকাটা দিতে আমার পরিবারের কষ্ট হয়েছে। টাকাটা ফেরত পেলে বাবাকে দিয়ে দিব, আর সরকারের এই উদ্যোগটা আমার মতো আরও হাজারো মধ্যবিত্ত পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবে।’

কেএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!