কলেজের অফিস সহায়কের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রী

করোনার সময় উপবৃত্তির কথা বলে এক ছাত্রীকে কলেজে ডেকে এনে শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী হাজী নুরুল হক ডিগ্রি কলেজের অফিস সহায়ক মো. মোরশেদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী।

লিখিত অভিযোগে ছাত্রীটি উল্লেখ করেন, ‘গত ১৮ মে কলেজের অফিস সহায়ক মো. মোরশেদ আমার বাবার মোবাইলে ফোন করে পরদিন সকালে উপবৃত্তির ফরমে স্বাক্ষর করতে হবে বলে আমাকে জরুরীভাবে কলেজে পাঠাতে বলেন। আমি পরদিন সময়মত কলেজে গিয়ে দেখি পুরো ক‍্যাম্পাস ফাঁকা। শুধুমাত্র একটি কক্ষের দরজা খুলে বসে আছেন মোরশেদ একাই। আমি ভয় পেয়ে ভেতরে না ঢুকে অনেকক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকি। তখন মোরশেদ একটি কাগজ বের করে এতে স্বাক্ষর করে যাও বললে আমি ওই কক্ষে ঢোকার সাথে সাথেই মোরশেদ আমাকে ঝাপটে ধরে সম্ভ্রমহানির চেষ্টা করে। আমার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়, ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আমি ছুটে দৌঁড়ে পালিয়ে এসে কোনমতে নিজেকে রক্ষা করি।’

অভিযোগ পত্রে ছাত্রীটি আরও লিখেন, ‘পরদিন পুরো ঘটনাটি আমি মৌখিকভাবে অধ‍্যক্ষ মহোদয়কে জানালে তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বললে আমি তা লিখিতভাবে দিই। কিন্তু ঘটনার একমাস পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে গড়িমসি করতে থাকায় নিরুপায় হয়ে গত মঙ্গলবার (২৯ জুন) উপজেলা নির্বাহী অফিসে অভিযোগ করি।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো মোরশেদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ওই দিন কলেজে আমার সাথে দারোয়ান নুরু মিয়াও উপস্থিত ছিলেন। ওই ছাত্রী কলেজে ঢুকতে চাইলে কলেজ বন্ধ বলে দারোয়ান তাকে তাড়িয়ে দেন। কোন ঘটনা না ঘটার পরও পরদিন আমার বিরুদ্ধে একটা কাল্পনিক অভিযোগ তুলে তারা আমার গায়ে হাত তুলে। পরে অধ‍্যক্ষ স‍্যার এর এটির মিমাংসা করে দেন। এ নিয়ে আবার কেন এত মাতামাতি ও অভিযোগ বুঝতে পারছি না।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুন নাহার অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার সাথে-সাথেই আমি ব‍্যাপারটি নিয়ে অধ‍্যক্ষ ও কলেজের সভাপতির সাথে কথা বলে ঘটনার প্রাথমিক সত‍্যতা খুঁজে পেয়েছি। কিন্তু চলমান লকডাউনের ব‍্যস্ততার কারণে কিছুটা বিলম্ভিত হচ্ছে। তবে ঘটনার যথাযথ বিচার হবে। দোষী সাব্যস্ত হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ‍্যক্ষ কাইসারুল হক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ছাত্রীর অভিযোগের পর আমি প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত‍্যতা পেয়ে তা কলেজ গভর্নিং বডির সদস‍্য ও বোয়ালখালী ইউএনও মহোদয়কে অবগত করি। আমি ও এ ঘটনার যথাযথ সুবিচার কামনা করি।’

অন্যদিকে, বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ নিয়ে এ যাবৎ থানাকে ঘটনাটি কেউ অবহিত করেনি। তবে অভিযোগ পেলে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!