করোনার প্রভাব আনোয়ারা-কর্ণফুলীর মানুষের জীবিকায়, কর্মহীন অনেকেই

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি প্রভাব ফেলেছে শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন জীবনে। করোনাভাইরাস ঠেকাতে সরকারের নির্দেশনায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা-কর্ণফুলী এখন অনেকটাই ‘লকডাউনে’। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

বৃহস্পতিবার থেকে হাট-বাজারসহ কারখানা ও দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ায় অনেকটা বাধ্য হয়েই মানুষ হোম কোয়ারেন্টাইনে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও শ্রমজীবী মানুষগুলো। পাল্টে গেছে দুই উপজেলার ৬ লক্ষাধিক শ্রমজীবী মানুষের জীবনচিত্র।

শনিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে এগারোটায় আনোয়ারা উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজার, আনোয়ারা সদর, বন্দর কমিউনিটি সেন্টার কাফকো, হাইলধর মালঘর বাজার, কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যারটেক, শিকলবাহা, ক্রসিং, ব্রিজঘাট, বাজার, চরলক্ষ্যা, সৈন্যারটেক, চরপাথরঘাটা সড়কে কোনো পথচারী নেই। তবে অলিগলিতে যুবকদের আড্ডা বেড়েছে।

আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার অধিকাংশ মানুষ শ্রমজীবি ও কৃষিজীবী। এসব মানুষ দৈনন্দিন শ্রমেই সংসার চালায়। করোনাভাইরাসের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা, দোকানপাট, হাট-বাজারসহ মানুষের জীবিকা ও আয় রোজগারের পথ বন্ধ রয়েছে। তাদের গৃহবন্দি জীবন যেন অভাব ও অনিশ্চয়তার ফাঁদ।

যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় কর্মহীন রয়েছেন মৎস্যজীবীরাও। গরুর খামারিরা দুধ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। মাঠে নষ্ট হচ্ছে কৃষকদের ফসল।

নির্মাণ শ্রমিক নাছির উদ্দিন প্রতিবেদককে বলেন, ‘চারদিন ধরে নির্মাণ কাজের উপকরণের সকল দোকান বন্ধ, বাড়ির মালিক ও ঠিকাদাররা নির্মাণ সামগ্রী যোগান দিতে না পারায় নির্মাণকাজও বন্ধ। বেকার হয়ে পড়েছে নির্মাণ শ্রমিকরা।’

চাতরী চৌমুহনী বাজারের সবজি ব্যবসায়ী শফিক বলেন, ‌‌‘বাজারে কোন ক্রেতা না থাকায় সবজিতে পচন ধরেছে। দোকান বন্ধ রাখার চিন্তা করছি। এখন আমাদের সরকার থেকে সাহায্য না করলে আমরা সমস্যায় পড়ব।’

রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে দরিদ্রদের ১০ টাকায় চাল প্রদান অব্যাহত রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে যে সকল মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হবে তাদেরও ১০ টাকার চাল প্রদান কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। এছাড়া সরকার ১০ টাকার চাল ছাড়াও বেশ কিছু খাদ্যসামগ্রী প্রদানের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দ্রুত এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।’

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ ও কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নোমান হোসেন জানান, ‘সরকার হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’

তিার জানান, আনোয়ারার জন্য ৬ মেট্রিকটন চাল ও ৫৫ হাজার টাকা, কর্ণফুলীর ৩৫০ পরিবারের জন্য চাল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সার্বক্ষণিক সেবা দিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যে কেউ সমস্যায় পড়লে কন্ট্রোল রুমে ফোন করলেই তার বাড়িতে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হবে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!