কর্ণফুলী গ্যাসে ২৬১ অবৈধ বাণিজ্যিক গ্যাস সংযোগ, ৩ কর্মকর্তা ধরাছোঁয়ার বাইরে

দুদকের তদন্তে শুধু পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক

অবৈধভাবে ২৬১টি বাণিজ্যিক গ্যাস সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সাবেক জেনারেল ম্যানেজারসহ (জিএম) তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তবে এদের সঙ্গে পেট্রোবাংলার সাবেক এক পরিচালকও জড়িত রয়েছেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত চললেও বাকি তিন কেজিডিসিএল কর্মকর্তা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

অভিযুক্তরা হলেন সাবেক জিএম (বিপণন উত্তর) প্রকৌশলী আ ন ম সালেহ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খায়েজ মজুমদার, জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) গৌতম চন্দ্র কুণ্ডু এবং পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক আলী মোহাম্মদ আল মামুন।

এদের মধ্যে প্রকৌশলী আ ন ম সালেহের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাকে পদাবনতি দিয়ে ঢাকার তিতাস গ্যাসে ডিজিএম হিসেবে বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে কর্মরত আছেন।

এর আগে ২০২২ সালের ১ মে কেজিডিসিএলের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পেট্রোবাংলা বাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) আলী ইকবাল মো. নূরুল্লাহ। প্রতিবেদনে অভিযুক্ত হিসেবে প্রকৌশলী আ ন ম সালেহ ও এমডি খায়েজ মজুমদারকে চিহ্নিত করেছে পেট্রোবাংলার ওই তদন্ত কমিটি।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরু হয়। এই সময় সাবেক এমডি খায়েজ মুজমদার নেতৃত্বে এই সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে।

সিন্ডিকেটের মূল ভূমিকায় ছিলেন সাবেক জিএম (বিপণন উত্তর) প্রকৌশলী আ ন ম সালেহ। কেজিডিসিএলের বিপণন উত্তর ও দক্ষিণ বিভাগে দু’জন কর্মকর্তা থাকার সত্ত্বেও নিয়ম ভেঙে দুই বিভাগের গ্যাস সংযোগের কাজ তিনি একাই করতেন। সেখানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিনি দক্ষিণ বিভাগে বাণিজ্যিক গ্যাস সংযোগ দেন ২৬১টি।

Yakub Group

অভিযোগ রয়েছে, মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ দিতেন প্রকৌশলী সালেহ। দুর্নীতির টাকার ভাগ-বাটোয়ারা পেতেন সিন্ডিকেটের সদস্যরাও। সিন্ডিকেটের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক আলী মোহাম্মদ আল মামুন।

সম্প্রতি আলী মোহাম্মদ আল মামুনের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলমান থাকলেও বাকি সদস্যরা এখনও তদন্তের বাইরে।

নিয়ম অনুযায়ী, কেজিডিসিএলের বোর্ড সভায় অনুমোদনের পর বাণিজ্যিক গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ধাপ পেরিয়ে অনুমোদনের জন্য বিবেচনায় রাখা হতো। পরে কেজিডিসিএলের সংশ্লিষ্ট দুই বিভাগের যাচাই-বাচাই প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই নিয়ম না মেনে শুধুমাত্র বোর্ড সভার স্তর পার হওয়ার পর, কোনো ধরনের যাচাই-বাচাই না করে; একতরফাভাবে তারা বিপণন বিভাগ উত্তর ছাড়াও কাজ করতেন দক্ষিণ বিভাগের সমস্ত গ্যাস সংযোগেরও। ওই সময় বিপণন বিভাগ উত্তরে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বিপণন দক্ষিণ বিভাগে ২৬১টি গ্যাস সংযোগ দেন প্রকৌশলী আ ন ম সালেহ।

প্রকৌশলী আ ন ম সালেহের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রশ্ন করতেই তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে আবারও ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমি মোবাইলে কথা বলি না। আপনি (প্রতিবেদক) অফিসে কথা বলেন।’ এরপর তিনি সংযোগে কেটে দেন।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!