কর্ণফুলীতে স্কুল তৈরির কাজ নিয়ে ১০ মাস ধরে ঠিকাদারের হেলাফেলা
পুরাতন ভবন ভেঙে ফেলায় পাঠদানেও অনিশ্চয়তা
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের পশ্চিম চরপাথরঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে সরকার স্টিল নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভেঙে ফেলায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। উপায়ান্তর না দেখে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলী ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের পশ্চিম চরপাথরঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণে ৪ কোটি ২৭ লাখ ৬৯ হাজার ২৮২ টাকা ২৪ পয়সায় বরাদ্দে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সরকার স্টিল’ গত বছরের নভেম্বরে কাজ শুরু করে। বিশ্বব্যাংকের অর্থসহায়তায় এমডিএসপি/ ইসিআরআরপি প্রকল্পের অধীনে নির্মিতব্য এই স্থাপনা ১৬ মাসের মধ্যে শেষ করার অঙ্গীকার ছিল ঠিকাদারের।
কাজের সুবিধার্থে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ও ওয়াশরুম ভেঙে ফেলে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী সেট ও ওয়াশরুম তৈরি করে। কিন্তু গত রমজানে ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলে গেলে কাজ সম্পন্ন বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন সুরাহা না হলে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন জানান, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতির জন্য ৫৭২ জন শিক্ষার্থীর অ্যাসাইনমেন্ট ও অন্যান্য কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী যে সেট ও ওয়াশরুম তৈরি করে দিয়েছে তাও মানসম্মত নয়। এ অবস্থায় বিদ্যালয় খোলা হলে কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’
পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ সেলিম হক জানান, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার তাগাদা দিলেও তারা কাজ করছে না। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কোন ব্যবস্থা নাই। তাই ঠিকাদারের ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরের লিখিত অভিযোগ করেছি। আমরা যেন ।’
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, ‘বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে ফেলে রাখার বিষয়ে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কাজের অগ্রগতির বিষয়ে সরকার স্টিল লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মঈনুদ্দিন জানান, ‘ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শেষ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি, লকডাউন ও কোরবানের কারণে শ্রমিকরা বাড়ি চলে গেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজ আবার শুরু করা হবে।’