চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের জব্দ করা দুটি মাটি কাটার এস্কেভেটর চুরি হয়ে গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ৩০ লাখ টাকা।
জিম্মাদার শিকলবাহা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আসাদুজ্জামান কায়ছার থানায় চুরির অভিযোগে মামলা (নং-০৬) করেছেন। এ ঘটনায় প্রশাসনের নজরদারির ঘাটতি এবং দায়িত্বে অবহেলা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
স্কেভেটর দুটি ইউপি সদস্য মো. আসাদুজ্জামানের জিম্মায় রাখা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরা গত ২ জানুয়ারি জিম্মাদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, জিম্মাদার এস্কেভেটরের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি এবং নিলামে উপস্থিত না থাকায় এস্কেভেটরের নিলাম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়দের মতে, এত বড় আকারের এস্কেভেটর কীভাবে রাতারাতি চুরি হলো, তা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানের বড়সড় ফাঁক ফোকরের ইঙ্গিত দেয়। জব্দকৃত মালামালের পর্যাপ্ত সুরক্ষা এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ছিল না। পাশাপাশি জিম্মার জন্য যথাযথ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হয়নি।
জানা গেছে, পুলিশ ইতোমধ্যেই সন্দেহজনক একটি এস্কেভেটর জব্দ করলেও জিম্মাদারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় সেটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এদিকে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জিম্মাদার এস্কেভেটরের বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য প্রদান করেননি এবং নিলামে এস্কেভেটর দুটি তোলার জন্য উপস্থিতও ছিলেন না। এর ফলে এস্কেভেটরের নিলাম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরা ২ জানুয়ারি জিম্মাদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন, যেখানে বলা হয়েছে যে, জিম্মাদার তার দায়িত্ব পালন না করার কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে তিন দিনের মধ্যে জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছিল।
এ বিষয়ে জিম্মাদার মো. আসাদুজ্জামান কায়ছার বলেন, ‘এস্কেভেটর দুটি কীভাবে চুরি হয়েছে, আমি কিছু জানি না। প্রথমে এসিল্যান্ড অফিস থেকে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, আমি তার লিখিত উত্তর দিয়েছি। পরে এসিল্যান্ডের পরামর্শে আমি থানায় চুরির মামলা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি গত ১ জানুয়ারি এস্কেভেটর দুটি দেখতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে তা পাওয়া যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোনো সন্ধান পাইনি।’
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘জিম্মাদার থেকে দুটি এস্কেভেটর চুরি হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত বছরের ১২ মে দুপুরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কর্ণফুলী উপজেলার ভেল্লাপাড়া ব্রিজ এলাকায় অভিযানে নেতৃত্ব দেন কর্ণফুলী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অবৈধ তিন বালু মহালে অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ টাকা জরিমানা ও সাড়ে ৬ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ ৩০ হাজার ঘনফুট বালুসহ ২টি এস্কেভেটর জব্দ করেছিলেন।
এ সময় এলবি এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর প্রজ্ঞা জ্যোতি বড়ুয়া, ফতেহ আলী শাহ এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর নুরুল ইসলাম, সরওয়ার করপোরেশনের ম্যানেজার মো. করিমকে ১ লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
জেজে/ডিজে