কর্ণফুলীতে ছাত্রলীগের মিছিল, দুই নেতাকে আটকের পর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’র সক্রিয় কর্মী ও পদধারী দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ।

সরকারবিরোধী উস্কানিমূলক স্লোগান ও নাশকতার প্রস্তুতির অভিযোগে তাদেরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে ৩১ জনকে আসামি করে।

রোববার (১৮ মে) সকালে গ্রেপ্তারদের চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে শুক্রবার (১৬ মে) রাত ১টা ২০ মিনিটে উপজেলার জুলধা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের আটক করে।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শরীফ। তিনি জানান, গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তি নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’র সক্রিয় নেতা এবং আগে থেকেই নজরদারিতে ছিলেন।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন—কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী নজির উল্লাহ বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল মালেক ওরফে ঘোড়া মালেকের ছেলে রাহাত মাহমুদ ফারহান (২০), এবং শিকলবাহা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী ওমরা মিয়া চৌধুরী বাড়ির মৃত জহুর আহমদের ছেলে মো. রিকন ওরফে কফিল (৩০)।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৬ মে (শুক্রবার) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, নিষিদ্ধ সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’র একদল নেতাকর্মী কর্ণফুলী থানার জুলধা ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী জুলধা ইন্ডাস্ট্রিয়াল টিম পার্ক এলাকায় একটি বালুর মাঠে মিছিল করছে।

তারা লাঠিসোটা হাতে সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করে এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্যে সেখানে সমবেত হয়।

খবর পেয়ে রাত ১১টা ২০ মিনিটে কর্ণফুলী থানার মোবাইল ডিউটিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পুলিশ দেখে মিছিলে থাকা ৩০-৩১ জন দ্রুত বিভিন্ন দিকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ৯টি বিভিন্ন আকারের বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে। ভিডিওর ভিত্তিতে শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে জুলধা ও শিকলবাহা এলাকা থেকে রাহাত মাহমুদ ফারহান ও মো. রিকন ওরফে কফিলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, তারা দুজনসহ পলাতক বাকিরা নিষিদ্ধ সংগঠনের সক্রিয় সদস্য এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনায় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ আরও জানায়, ওই মিছিলের নেতৃত্ব দেন মো. মনির উদ্দিন নাঈম (২৮)। তার নেতৃত্বে একটি পরিকল্পনা ছিল জুলধা বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলার।

এই ঘটনায় কর্ণফুলী থানার এসআই জুয়েল মজুমদার বাদি হয়ে ১৭ মে রাতে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও ১৪-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নাম উল্লেখ থাকা অন্যান্য আসামিরা হলেন—মো. মনির উদ্দিন নাঈম (২৮), মো. ফয়সাল (১৮), মো. মাসুদ (২০), মো. হানিফ (২২), তৌসিফ (১৮), আকাশ (১৮), জিসান (১৮), জাহিদুল (১৯), নাবিল (২৩), মামুন (৩০), ইমরান (২৫), হাসান (২৬), মিজান (১৯), মনির (২৬), এবং সরোয়ার (২৫)। তাদের অধিকাংশের বাড়ি কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতান বাপের বাড়ি এলাকায়।

পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে কর্ণফুলী থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি মোহাম্মদ শরীফ।

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm