কর্ণফুলীতে খালের ওপর ইসলামী ফ্রন্ট নেতার মার্কেট

ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর জামতলা বাজার এলাকায় ফিরিঙ্গি খাল দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইসলামী ফ্রন্টের এক নেতার বিরুদ্ধে। এতে খালের স্বাভাবিক পানি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এ কারণে আগামী বর্ষায় এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন শাহ মিরপুর ও জুলধা এলাকার আড়াই লাখ বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (কেইপিজেড) ও পাহাড়ের পানি ফিরিঙ্গি খাল হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে। শাহ মিরপুর ও জুলধা এলাকার প্রায় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ১০-১২ কিলোমিটারের ঐতিহ্যবাহী এই খাল থেকে বর্ষার আগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা না হলে পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে পুরো এলাকা।

জানা যায়, খাল দখল করে মার্কেট নির্মাণকারী রোমান জাবেদ কর্ণফুলী উপজেলার দক্ষিণ শাহ মিরপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুন্দরী পাড়া এলাকার শামসুল আলমের পুত্র। তিনি উপজেলার জুলধা এলাকার বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নেতা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দেয়াং পাহাড়, কোরিয়ান ইপিজেড (কেপিজেড) ও শাহ মিরপুরের জুলধা হয়ে কর্ণফুলী নদী সংযুক্ত প্রায় কিলোমিটারের ফিরিঙ্গি খাল। পুরো এলাকার পানি চলাচল করে এই খাল দিয়ে। দীর্ঘদিন খালটি সংস্কার না হওয়ায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে খালের বেশ কিছু অংশ। তারওপর শাহ মিরপুরের জামতলা বাজার সংলগ্ন ফিরিঙ্গি খালের একটি অংশজুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে একতলা বিশিষ্ট মার্কেট। সেখানে প্রতিটি দোকান বরাদ্দ পেতে ৫ লাখ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে মার্কেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোমান জাবেদ বলেন, আমার পৈতৃক জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে খালের পানি চলাচলের কোনও সমস্যা হচ্ছে না।

জানতে চাইলে জুলধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিক আহমেদ দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, জামতলা বাজার এলাকায় ফিরিঙ্গি খাল দখল করে মার্কেট নির্মাণ করছেন রোমান জাবেদ নামে এক ব্যক্তি। খাল দখল না করতে তাকে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি তা আমলে নেননি। জোরপূর্বক এটি করে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী বলেন, কিছুদিন আগে উপজেলায় আর একটি সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কাজ আমার নজরে আসার পর প্রশাসনের সহযোগিতায় তা উচ্ছেদ করা হয়েছে। জামতলা বাজার সংলগ্ন ফিরিঙ্গি খালের বিষয়টি আজই শুনলাম। সেটাও শীঘ্রই উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, খাল দখলের বিষয়টি এখন শুনলাম। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। ঘটনার সত্যতা পেলে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত কিছুদিন আগেও ওই এলাকায় খালের ওপর একটি ভবন নির্মাণের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উচ্ছেদ করা হয়েছে। জনস্বার্থবিরোধী কোনও কাজ কাউকে করতে দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।

এসএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!