মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামে অস্থির হয়ে উঠেছে আমদানিনির্ভর পাইকারি ও খুচরা ফলের বাজার। আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং জটিলতা ও পরিবহন সংকটসহ বিভিন্ন কারণে পাইকারি বাজারে সৃষ্টি হয়েছে সরবরাহ জটিলতা। এ কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের ফলের দাম। তবে পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির সামান্য আঁচেই অস্থির হয়ে উঠেছে ভারত, চীন, মিশর থেকে আসা কমলা, আনার, আঙ্গুরসহ বিভিন্ন রকম ফলের খুচরা বাজার।
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার, রেয়াজউদ্দিন বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে কমলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, আনার বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, চাইনিজ ছোট কমলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, আপেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। কেজিপ্রতি গড়ে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে এসব ফলের দাম।
খুচরা ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন বলেন, ‘পাইকারি বাজারে বেড়েছে এসব ফলের দাম। তাই খুচরা পর্যায়েও বেড়েছে দাম।’
তবে ভোক্তাদের দাবি, করোনাকাণ্ডে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ানো হয়েছে এসব ফলের দাম। এমন অগ্নিমূল্য থামাতে কঠোর বাজার মনিটরিংয়ের দাবি জানান তারা।
চট্টগ্রামের বৃহৎ ফলের বাজার ফলমণ্ডির পাইকারি বাজারে মানভেদে ২৪ কেজির কমলার ক্যারেট বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ২৭০০ টাকা, মাল্টা ১৫ কেজির ক্যারেট বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা, আপেল ১৮ কেজির ক্যারেট বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকা, ছোট কমলা (চাইনিজ) ৮ কেজির কার্টন বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। আনার বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
চট্টগ্রামের আমদানিনির্ভর এসব ফলের পাইকারি ব্যাবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় ক্যারেটে গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে এসব ফলের দাম। বর্তমান বাজারে কমলা, মাল্টা এবং আপেলের চাহিদাই বেশি। অন্যান্য ফলের চাহিদা কম। এমন পরিস্থিতিতে দাম বৃদ্ধিতে চাহিদা কম কিংবা বেশি নয়, বরং সরবরাহ জটিলতাকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার প্রভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যাংকিং জটিলতা ও পরিবহন সংকটের কারণে বন্দরের কন্টেইনারে আটকে আছে এসব মালামাল। সরবরাহ জটিলতায় মুখে ইতোমধ্যে সংকট দেখা দিয়েছে ভারত থেকে আমদানিকৃত কমলা, আঙ্গুর ও আনারের। তবে এসব ফলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে চাহিদাও কমে এসেছে। অন্যদিকে, দাম কিছুটা হাতের নাগালে থাকায় বিক্রি বেড়েছে মাল্টা ও আপেলের।
আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ী তারেকুল ইসলাম বলেন, এসব ফল বন্দরের কন্টেইনারে আটকে আছে। ব্যাংকিং জটিলতাসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে এগুলো বের করে আনতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে ফলের বাজারে এই সংকট আরও চরমে পৌঁছাবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বে।
এএ/এসএ