কক্সবাজারের রামুতে অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্ট স্থাপন করল আইওএম

কোভিড-১৯ মোকাবেলা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) কক্সবাজারে এই প্রথম অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্ট স্থাপন করল। জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থাটির এই নতুন উদ্যোগের উদ্দেশ্য হল রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারের (আইটিসি) কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা, যাতে এই স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কোভিড-১৯-এ মারাত্মকভাবে আক্রান্তদের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়। এখন পর্যন্ত জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় অন্যান্য সংস্থার উদ্যোগের পাঁচটি অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্ট স্থাপিত হয়েছে।

রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইটিসিতে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এই অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্ট উদ্বোধন করেন। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহজাহান আলী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত হওয়া অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্টটি কক্সবাজারে আইওএম অক্সিজেন প্রকল্পের অন্যতম একটি অংশ। কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কোভিড-১৯-এ আক্রান্তদের চিকিৎসায় এই অক্সিজেন প্লান্টটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্টটি আইটিসিতে ৫০টি শয্যার অবিচ্ছিন্ন পাইপযুক্ত অক্সিজেন প্রবাহ সরবরাহ করবে। এই প্রকল্পটির দীর্ঘমেয়াদী রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনা নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তিবিদ নিয়োগ এবং প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।

কক্সবাজারের রামুতে অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্ট স্থাপন করল আইওএম 1

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রধান গিওরগি গিগৌরি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধি ডা. আলমগীর, রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া এবং রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল।

এই অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্টটির পাশাপাশি, আইওএম রামু ও চকরিয়া উপজেলার আইটিসিগুলোর কলেবর এবং সক্ষমতা বাড়াতে নানাভাবে সহযোগিতা করছে। এছাড়া ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পিপিই, অক্সিজেন সিলিন্ডার, স্যাম্পল কালেকশন যন্ত্রপাতিসহ নানাপ্রকার মেডিকেল সরঞ্জামাদি সরবরাহ অব্যাহত আছে। এ পর্যন্ত আইওএম এই আইটিসিগুলোর জন্য ৫ হাজার ফেইস-শিল্ড, ১ হাজার মেডিক্যাল কভারল, ১০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক, ১ হাজার এন৯৫ মাস্ক; ৩০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার; ৮টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর; ১০০টি অক্সিজেন ফেইসমাস্ক এবং ৫০টি পালস অক্সিমিটার সরবরাহ করেছে। এছাড়া দুটি এক্স-রে মেশিন, ২০টি নেবুলাইজার মেশিন, ১০০টি হাই-ফ্লো ন্যাসাল ক্যানোলা এবং অন্যান্য পিপিই শীঘ্রই এই আইটিসিগুলো সরবরাহ করা হবে।

অন্যদিকে রামু ও চকরিয়ার দুইটি আইটিসিতে রোগী আনা-নেওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স কক্সবাজারের সিভিল সার্জন অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত রামু আইটিসিতে ২৪৩ জন রোগী (কোভিড-১৯-এ শনাক্ত ও সন্দেহভাজন) এবং চকরিয়া আইটিসিতে ১৯৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে কয়েক হাজার মানুষকে কোভিড-১৯-এর শনাক্তের পরীক্ষা করা হয়েছে।

এছাড়া জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থাটি এই মহামারীর শুরু থেকেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহযোগিতার পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের জন্য কাজ করে আসছে। আইওএম-এর মাইগ্রেশন হেলথ ডিভিশন চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রকে পুনর্গঠন করেছে যেখানে সেন্টিনাল স্যাম্পল সংগ্রহের পাশাপাশি আইসোলেশনেরও সুবিধা আছে। এছাড়া এ পর্যন্ত তিনটি এসএআরআই আইটিসির ২৩০টি শয্যার মাধ্যমে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোভিড-১৯-এর সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!