কক্সবাজারের মেগাপ্রকল্পের দুর্নীতি ধরে চাকরি হারান শরীফ উদ্দিন

পাঁচলাইশে রহমানিয়া স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ২০০২ ব্যাচের মানববন্ধন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রামের একটি স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তার ২০০২ ব্যাচের বন্ধুমহল।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষব আবু তৈয়ব, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. আলমগীর, সিনিয়র সহকারী সজল আচার্য, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক নূর হোসেন, রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের হাসান, রাহুল জাবেদ, বাদশা, মজু, আকতার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়ব বলেন, ‘বর্তমান সরকারঘোষিত জিরো টলারেন্স বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দুর্নীতিবাজদের রোষানলের শিকার হয়েছেন রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্র ও সৎ ব্যক্তি শরীফ উদ্দিন। তাকে অসাংবিধানিক, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। একটি সিন্ডিকেটের চাপে শরীফ উদ্দিনকে প্রথমে পটুয়াখালী বদলি করার পরপরই কর্মরত থাকা অবস্থায় অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। সরকারকে অনুরোধ করছি, সৎ ও মেধাবী সাবেক দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনকে চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য।’

বক্তারা বলেন, ‘রহমানিয়া স্কুল তথা দেশের গর্ব দুদকের সাবেক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন। প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। ছাত্রজীবন থেকে তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিলেন। অন্যায়ের সঙ্গে কখনও আপোষ করেননি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুর্নীতিবাজদের চক্ষুশূল হয়েছেন। দুদকে কর্মরত থাকা অবস্থায় দুর্নীতি ধরে দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যখাতকে পরিশীলিত করেছেন। কর্ণফুলী গ্যাস সেক্টরে দুর্নীতি তদন্ত করতে গিয়ে রোষানলে পড়েছেন বেশ কয়েকবার। যারা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে ওই কাজটি শক্তভাবে আঞ্জাম দিয়ে বেশ কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

বক্তারা আরও বলেন, ‘কক্সবাজারে সরকারের তিন দশমিক পাঁচ লাখ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পে দুর্নীতি ধরতে গিয়ে তিনি চাকরি হারিয়েছেন। এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কমিশন বরাবরে প্রায় ৬০০ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ায় প্রথমে তাকে বদলি, পরে পদোন্নতিবঞ্চিত করা হয়। পরে তাকে অসাংবিধানিক, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চাকরি থেকে অপসারণও করা হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সাবেক আলোচিত কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। ওই সময় তিনি দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালীতে উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজধানীতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি মানববন্ধন করেন দুদকে কর্মরত মধ্যম ও নিম্নপদস্থ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। মানববন্ধ শেষে দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর একটি স্মারকলিপিও জমা দেন ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। স্মারকলিপিতে দুদকের কর্মচারী (চাকরি) বিধিমালা-২০০৮ এর বিতর্কিত ৫৪ (২) ধারা বাতিল করার দাবিও জানান তারা।

এমএ/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm