চন্দনাইশের দুই ভাইকে অপহরণ ও গুলি করে হত্যার অভিযোগে ওসি প্রদীপসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নিহতদের বোন রিনাত সুলতানা শাহীন আদালতে মামলা দায়েরের পর আজ রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) বাদি ও স্বাক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। একই দিনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) নিহতদের ছোট বোন রিনাত সুলতানা শাহীন বাদি হয়ে চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমীর আদালতে ওসি প্রদীপসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করেন। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বাদি ও সাক্ষীকে আজ রোববার দুপুর ১২টায় ডাকেন পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) মো. মজিফ উদ্দিন।
এ বিষয়ে বাদি রিনাত সুলতানা শাহীন চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) মো.মজিফ উদ্দিন আমাকে দুপুর ১২ টায় আসতে বলেন। তারপর পরপরই পেশকার কিছু প্রশ্ন করেন সেদিনে ঘটনার আমি সেদিন সত্য ঘটনা তুলে ধরেছি। উনারা জিজ্ঞেস করেছেন, আমার বড় ভাইকে কয় তারিখ তুলে নিয়ে গেলো ও আমার ছোট ভাইকে কত তারিখ? আমরা কোন জিডি করেছি কী না? বলেছি আমরা সেই সময়টুকু পাইনি। যখন থানায় গিয়ে জিডি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেদিনই আমার বড়ভাইকে নিয়ে গেছে। সে সময় চন্দনাইশ থানা বলেছে বড় ভাইকে সন্দেহজনক হওয়ার কারণে নিয়ে গেছে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফেরত দিবে।
আমার মা (আনোয়ারা বেগম) ও বড় বোনকে (আইরিন আক্তার) স্বাক্ষী দিতে ডাকা হয়। সেই সময় তাদেরকেও একই প্রশ্ন করা হয়। আমার জবানবন্দির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য। বড় ভাবী স্বাক্ষী হিসেবে থাকলেও উনি অসুস্থতা বোধ করায় ওনার বক্তব্য কয়েকদিন পর নেওয়া হবে।
জবানবন্দিতে বাদি বলেন, গত ১৩ জুলাই প্রথমে বাহারাইন ফেরত ছোট ভাই আজাদ নিখোঁজ হয়। এর দুদিন পর ১৫ জুলাই আজাদের বড় ভাই ফারুককে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের সামনের ভাড়া বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় চন্দনাইশ থানা পুলিশ। ওদিন সন্ধ্যায় ফারুককে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়। কয়েক ঘণ্টার মাথায় ফারুক ও আজাদের মায়ের মোবাইলে একটি নম্বর থেকে ফোন করে অজ্ঞাত পরিচয় একজন বলেন, ‘তোর দুই ছেলে আমাদের কাছে আছে। দুই ছেলেকে জীবিত ফেরত চাইলে রাতের মধ্যে আমাদের ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। না হলে সকালে ছেলের লাশ পাবি।’ একথা বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
এর পরদিন ১৬ জুলাই সকাল ৮টা নাগাদ টেকনাফ থানা থেকে নিহতদের মায়ের নম্বরে ফোন করে জানানো হয় দুই ভাই আজাদ ও ফারুক টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
এরপর গত ২ সেপ্টেম্বর নিহতের বোন বাদি হয়ে প্রদীপ কুমার দাশ ছাড়াও টেকনাফ থানার উপ-পরিদর্শক ইফতেখারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাজহারুল, দ্বীন ইসলাম ও আমজাদ ও স্থানীয় চন্দনাইশ থানার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও এই ঘটনায় জড়িত দাবি করে তাদের নাম তদন্তে জানা যাবে বলে জানিয়ে মামলা দায়ের করেন।
আরএ/এসএস