এস আলমের চিঠি গেল বাংলাদেশ ব্যাংকে, ভেতরে দুই সাবধানবাণী

জব্দ করা ব্যাংক একাউন্ট খুলে দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ। একইসঙ্গে তারা সরকারের কাছে আর্থিক, আইনগত ও সামাজিক সহায়তাও চেয়েছে। তারা সতর্ক করে দিয়েছে, ব্যাংক একাউন্ট খুলে না দিলে বিভিন্ন শিল্প এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া এস আলম গ্রুপকে এলসি বা ঋণপত্র খুলতে দেওয়া না হলে দেশে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্যের সংকট হতে পারে বলেও ওই চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে ‘সতর্ক’ করে দেওয়া হয়েছে।

একই চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটেও (বিএফআইইউ) দেওয়া হয়েছে। তবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিদেশে পাচার করা অন্তত দুই লাখ কোটি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে এস আলম গ্রুপ ওই চিঠিতে কিছু উল্লেখ করেনি। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক এই চিঠিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

ক্ষমতাচ্যূত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংক দখল, নামে-বেনামে টাকাপাচারসহ বড় ধরনের আর্থিক অপরাধের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এস আলম গ্রুপের চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির যেসব হিসাব ছিল, সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে বলে কর্মীদের সময়মতো বেতন-ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। তাতে বিভিন্ন শিল্প এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এতে বলা হয়, লেনদেন স্থগিত হওয়ায় এস আলম গ্রুপ বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধ করতে পারছে না। তাদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির মতো পরিষেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই পরিস্থিতিতে এস আলম গ্রুপের পক্ষে সরকারের কর, ভ্যাট ও কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

চিঠিতে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির বেচাবিক্রি কমে যাচ্ছে। পরিণামে ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো অনেক শ্রমিক কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

এতে আরও বলা হয়, এস আলম গ্রুপের এলসি বা ঋণপত্র জোরপূর্বক বাতিল করা হচ্ছে। এর মধ্যে খাদ্য ও সহায়ক অন্যান্য পণ্যের এলসিও আছে। এস আলম গ্রুপ মনে করছে, এর ফলে দেশে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্যের সংকট হতে পারে।

বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ঋণের এই টাকায় সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবার সিঙ্গাপুর, দুবাই, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ জানিয়েছেন, ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে বিতরণ করা ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা এস আলম গ্রুপ একাই বের করে নিয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm