এস আলমের আনছার চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ধরা, ২০০০ কোটি টাকা পাবে দুই ব্যাংক
মাসিক আয় ২ লাখ, ঋণ পেয়েছেন ২০০০ কোটি
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও দুঃসম্পর্কীয় ফুফাতো ভাই আনছারুল আলম চৌধুরী দুবাই পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক হয়েছেন চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে। বাংলাদেশের দুটি ব্যাংক তার কাছ থেকে ১ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা পাবে।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ৫৯ বছর বয়সী আনছারুলকে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করেছে। তিনি ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দুবাই চলে যাচ্ছিলেন।
আনছারুলের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়ায়। খাতুনগঞ্জের আছদগঞ্জে ‘আনছার এন্টারপ্রাইজ’ ও ‘ইনহেরেন্ট ট্রেডিং’ নামে তার দুটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, এসব প্রতিষ্ঠান ঢেউটিনের ব্যবসা করে থাকে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা ডেটাবেজ সফটওয়্যার—এসাইকুডা যাচাই করেও আনসারুলের প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে কোনো ধরনের পণ্য আমদানির রেকর্ড খুঁজে পাননি।
তার আরও একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ‘ইনহেরেন্ট ট্রেডিং’। ভুয়া এই প্রতিষ্ঠানের নামেই আনছারুল আলম চৌধুরী ইসলামী ব্যাংকের চাক্তাই শাখা থেকে ঋণ নিয়েছেন ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটির হিসাব খোলার আবেদন ফরমে মাসিক আয় দেখানো হয়েছিল মাত্র দুই লাখ টাকা।
২০২২ সালের ৩ নভেম্বর আনছারুল আলম জনতা ব্যাংকে একটি একাউন্ট খোলেন। সেখানে তিনি নিজেকে ঢেউটিন আমদানিকারক হিসেবে উল্লেখ করেন। এর মাত্র তিনদিনের মাথায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের কয়েকটি শাখায় প্রায় অর্ধ হাজার কোটি টাকার এফডিআর খোলা হয় আনছারুলের প্রতিষ্ঠানের নামে।
এই এফডিআর খোলার ১০ দিনের মাথায় ১৭ নভেম্বর জনতা ব্যাংক থেকে এক বছর মেয়াদী ৩৪০ কোটি টাকা ঋণ নিতে আবেদন করেন আনছারুল। এর বিপরীতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকে খোলা সেই এফডিআরগুলো জমা দেওয়া হয়। ঋণ আবেদনের এক সপ্তাহের মধ্যেই ঋণগুলো অনুমোদন দেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম আজাদ। এরপরই আনছারুলের ছদ্মবেশে ৩৪০ কোটি টাকা বের করে নিয়ে আসে এস আলম গ্রুপ।
দুটি ব্যাংক থেকে এভাবে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা টাকা বের করে নেওয়া হলেও এমনকি একদিনের জন্যও ব্যাংকে যেতে হয়নি আনছারুল আলমকে।
সিপি