এমপিওভুক্তিতে উল্টো হতাশ চবির ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা!

শিক্ষকদের দাবির মুখে ২৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকার এমপিওভুক্ত করার ঘোষণা দেয়। স্রোতের বিপরীতে গিয়ে এমপিওভুক্তকরণ বাতিলের দাবি তোলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এমপিওভুক্তি বাতিলের দাবি আদায়ের জন্য বৃহস্পতিবার ক্লাস বর্জন থেকে শুরু করে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেয়া এমন কি এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করায় অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা দাবি করে, তারা স্বায়ত্তশাসিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্বে থাকতে চান সরাসরি সরকারের কর্তৃত্বে যেতে চান না।

প্রসংগত, শিক্ষকদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকার ২৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ‘মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার’ বা এমপিওতে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতনের মূল অংশ এখন সরকারি কোষাগার থেকে হবে। যার ফলে সরকারি বেশ কিছু নিয়ম-কানুনও মেনে চলতে হবে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে।

এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক শাখায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে। এই মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এতদিন সরাসরি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হত।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নেতৃস্থানীয় একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হই। কিন্তু বর্তমান অধ্যক্ষ আমাদের এই প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নেন। আমাদের কলেজে বেশ কয়েকজন শিক্ষক খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করছেন। এমপিওভুক্ত হলে তাদের চাকরি চলে যাবে। আমরা শিক্ষার্থী হয়ে চাই না আমাদের কোনো শিক্ষক চাকরিচ্যুত হোক।

এ সময় শিক্ষার্থীরা এমপিওভুক্তির উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফজলুল হককে দায়ী করে। তার পদত্যাগের দাবি তুলেছে শিক্ষার্থীরা।অধ্যক্ষ ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন শামসাদ বেগম চৌধুরী, বৃহস্পতিবার তিনিই শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন।

শামসাদ বেগম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার কক্ষেও তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় আমি বের হই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের সাথে আমাদের শিক্ষকদের কথা হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

এমপিওভুক্তির বিষয়ে শামসাদ বলেন, ‘আমি এমপিওভুক্তির ব্যাপারে কিছুই জানি না। ফজলুল হক স্যার চিকিৎসা ছুটিতে রয়েছেন। আমি শুধু মাত্র কয়েকদিনে জন্য ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।’

ছুটিতে থাকা অধ্যক্ষ ফজলুল হক টেলিফোনে বলেন, ‘এটা সরকারের একটি সিদ্ধান্ত, এখানে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অযৌক্তিক। কারো প্ররোচনায় তারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে।’

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়ে নিয়ে ভাবনায় পড়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও।

বিশ্ববিদ্যালয় সহকারী প্রক্টর রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষা শেষ হলে সকলের সাথে বসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরএ/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!