চট্টগ্রাম জেলা থেকে এবার কাউকে সেরা ভ্যাটদাতার সম্মাননা দেওয়া হয়নি। জাতীয় ভ্যাট দিবসে নানান আয়োজন করা হলেও পুরস্কার ওঠেনি কোনো প্রতিষ্ঠানের হাতে।
তবে ভ্যাটের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে সেন্ট্রালি সেরা ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তাই বিভাগীয় বা জেলাভিত্তিক এ আয়োজন করা হয়নি।
নির্ভারযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভ্যাট বাবদ মোট ১৭ হাজার ৮১৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা আহরণ হয়েছে। এরপরও কোনো প্রতিষ্ঠানকে সেরা ভ্যাটদাতার পুরস্কার দেওয়া হয়নি। মূলত আওয়ামী লীগ সমর্থিত কিছু ব্যক্তির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এ তালিকার শীর্ষে থাকার কারণে এবার সেরা ভ্যাটদাতার সম্মাননা দেওয়া হয়নি।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে শীর্ষ ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের কাস্টমস এক্সসাইজ অ্যান্ড ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেটের কমিশনার মো. মাহফুজুল হক ভূঁঞা। তিনি বলেন, ‘আইএমএফ র্যা ঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থান ৩৫তম। রাজস্ব সংগ্রহের চেয়ে রাজস্ব বোর্ডের বড় কাজ হলো ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড ফ্রেন্ড পরিবেশ তৈরি করা।
চট্টগ্রামের কাস্টমস এক্সসাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মুহাম্মদ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কর অঞ্চল-১ এর কমিশনার ড. মো. সামছুল আরেফিন, কাস্টম হাউসের কমিমনার মো. জাকির হোসেন, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ শফি উদ্দিন।
‘জনগণের অংশগ্রহণে উন্নয়নবান্ধব মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রামের কাস্টমস এক্সসাইজ অ্যান্ড ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক একেএম নুরুল হুদা আজাদ।
প্রধান অতিথি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ভ্যাট কিন্তু জনগণ দিচ্ছে। কেউ বলতে পারবেন না মানুষ ভ্যাট দিচ্ছে না। রেস্টুরেন্ট ও মিষ্টির দোকান থেকে আমরা ভ্যাট চালান নিই না, ফলে তারাই লাভবান হচ্ছে। ভ্যাটের একেক জায়গায় একেক রেট, এটাকে এক জায়গায় আনতে হবে। জনগণের যে মৌলিক অধিকার আমরা যদি সেগুলো নিশ্চিত করতে না পারি, তাহলে উন্নয়নের কি দরকার? চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ভর্তুকি দেয় প্রতিবছর। প্রতিমাসে প্রতিষ্ঠানটির খরচ ৩০ কোটি টাকা। অথচ দেশ থেকে উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে।’
মেয়র বলেন, আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে খেয়ে ভ্যাট চালান নিই না, পারলে কিছু বকশিশ দিই। যেসব অফিসার ভ্যাটের জন্য যায়, তারাও রেস্টুরেন্টে ভুঁড়িভোজ করে চলে আসে—এটাই বাস্তবতা। তাই ভ্যাট আদায়ে নিজেকে সৎ হতে হবে। এদেশ আমাদের সবার। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নতি করতে হবে।
ডিজে