এনআইডি জালিয়াত রোহিঙ্গা নেতার সঙ্গে মেয়র মুজিবের শোডাউন

মিয়ানমারের অধিবাসী হয়েও বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির দায়ে অভিযুক্ত এক রোহিঙ্গা নেতা এখন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ঝাঁপও শুরু করে দিয়েছেন। আর এই কর্মকাণ্ডে ওই রোহিঙ্গা নেতা সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানকে।

কক্সবাজার জেলার সদর থানার ইসলামাবাদ এলাকার বাসিন্দা জালাল আহমদের পুত্র রোহিঙ্গা নাগরিক নাঈমুল ইসলাম। সম্প্রতি ইসলামাবাদ এলাকার ৮ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন এই রোহিঙ্গা নেতা। জাতীয় পরিচয়পত্র বানানোর দায়ে তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের ওই মামলায় বর্তমানে ‘পলাতক’ রয়েছেন তিনি।

২০২১ সালের ১৭ জুন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। দুদকের ওই মামলায় ১৩ জন রোহিঙ্গাকে আাসামি করা হয়। ওই ১৩ জন আসামির মধ্যে মো. নাঈমুল ইসলাম ও তৈয়ব জালালের নাম এজাহারে উল্লেখ রয়েছে।

২০১৮ সালের ৭ এপ্রিল কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নেন সাতজন রোহিঙ্গা। এ প্রত্যয়নে জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্মার্ট কার্ড নেন নাঈমুল ইসলাম ও তৈয়ব জালালসহ একই পরিবারের সাতজন। পরবর্তীতে ওই সাতজনকে ‘রেফারেন্স’ হিসেবে দেখিয়ে ভোটারসহ স্মার্ট কার্ড হাতে পেয়েছিলেন আরও ২০০ রোহিঙ্গা।

সম্প্রতি কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ এলাকায় বন্যা কবলিত মানুষের খোঁজ নিতে যান কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান। তার এ আগমনে আগে থেকে বিশাল লোকবহর নিয়ে হাজির ছিলেন নাঈমুল ইসলাম। সেখানে পলাতক এ আসামির সঙ্গে করর্মদন করেন মেয়র মুজিব। বিশাল এ গণউপস্থিতিতে রোহিঙ্গা নেতা নাঈমুল ইসলামকে সামনের ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করানো চেষ্টা করেন মেয়র মুজিব।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৯ জুলাই ইসলামাবাদ এলাকায় বন্যাকবলিত মানুষের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান। সেখানে এলাকার লোকজন নিয়ে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গা নেতা নাঈমুল ইসলাম ও তার ভাই তৈয়ব জালাল। তারা দুজনই এনআইডি জালিয়াতির দায়ে দুদকের মামলায় অভিযুক্ত। তাদের সঙ্গে ছিলেন বর্তমানে ৮ নম্বর ইউনিয়নের মেম্বার শুক্কুরও। সেখানে যাওয়ার পরই মেয়র মুজিবের সঙ্গে করর্মদন করেন নাঈমুল ইসলাম।

জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কক্সবাজার জেলার ১৫ ইউনিয়নসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোট ৩২৩ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্বাচনে কক্সবাজার সদর থানার ইসলামাবাদ ৮ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন রোহিঙ্গা নাগরিক নাঈমুল ইসলাম।

এ বিষয়ে জানতে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানকে একাধিকবার কল করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মুআ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!