এখনও লুকিয়ে পটিয়ার জনপ্রতিনিধিরা, সেবা পাচ্ছে না মানুষ

চট্টগ্রামের পটিয়ায় আত্মগোপনে চলে গেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত জনপ্রতিনিধি। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নাগরিক সেবা নিতে আসা জনসাধারণ। ৯ দিন ধরে প্রায় পৌরসভা, ইউপি কার্যালয়, কাউন্সিলরের রুম তালাবদ্ধ পড়ে রয়েছে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত থাকছেন।

জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয়তা সনদ, চারিত্রিক সনদ, উত্তরাধিকার সনদ, ওয়ারিশান সনদের জন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে।

উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন পরিষদের ১৬ জন চেয়ারম্যান, মেম্বার, নারী সদস্য, মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর উপজেলা চেয়ারম্যান সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। শুধুমাত্র ছনহরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ দৌলতী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। তিনি নাশকতার মামলায় জেল থেকে মুক্ত হয়ে গত ৬ আগস্ট থেকে নাগরিকদের সেবা দিতে দেখা গেছে।

মূলত কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আত্মগোপনে চলে যান এসব জনপ্রতিনিধিরা।

কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পটপরিবর্তনের পর হামলার ভয়ে তারা গা-ঢাকা দেন। বর্তমানে তারা নাগরিক সেবা দ্রুত চালুর চেষ্টায় ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসছেন।

স্থানীয়রা জানান, যারা নানান অপকর্মের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে, মানুষকে শাসকের রূপে শোষণ করেছে, তারাই পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

আত্মগোপনে থানা জনপ্রতিনিধিদের স্বজনরা দাবি করেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পরপরই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা টার্গেট করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও তাদের সম্পদের ওপর হামলা চালাবেন—এমন শঙ্কার কারণেই অনেকে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে যেমন সাহস পাচ্ছে না। এজন্য কর্মস্থলেও যেতে পারছেন না।

কেলিশহর ইউনিয়নের বাসিন্দা রতন কান্তি দাশ বলেন, এক সপ্তাহ ধরে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট, নাগরিক সনদপত্র, ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সেবা পাচ্ছেন না সেবাপ্রত্যাশীরা।

তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের তাদের কার্যালয়ে যোগদানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইউপি সচিবরা স্থানীয় নাগরিকদের কাছ থেকে জন্মসনদ, ওয়ারিশান সনদের জন্য বেশি টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন ভূঞা জনী বলেন, ‘কোনো চেয়ারম্যান বা জনপ্রতিনিধি যদি তাদের নিজ নিজ কার্যালয়ে আসতে সমস্যায় পড়েন তাহলে প্যানেল চেয়ারম্যানরা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। এ অযুহাতে তো আর স্বাভাবিক নাগরিকসেবা বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আমি ইউনিয়নের সচিবদের নির্দেশনা দিচ্ছি।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm