পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল গত সপ্তাহে শেয়ারদর ও বাজার মূলধনের বড় ধরনের পতনের সন্মুখীন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটির শেয়ারের দাম এক সপ্তাহে কমেছে ১৮.৫৬ শতাংশ।
গত ২৬ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৯ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের ১৯ ডিসেম্বর ছিল ১১ টাকা ৫০ পয়সা। এতে প্রতি শেয়ারে দাম কমেছে ১ টাকা ৮০ পয়সা। বাজার মূলধন কমেছে ১৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা কোম্পানিটিকে শেয়ার লুজারের শীর্ষে নিয়ে এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পিই রেশিও ছিল ২৫.৯৮ পয়েন্ট, যা বিনিয়োগের জন্য তুলনামূলক নিরাপদ বলে বিবেচিত। সাধারণত পিই রেশিও ১৫ পয়েন্টের নিচে থাকলে বিনিয়োগকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরা হয়। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশিকা অনুযায়ী, ৪০ পিই রেশিও পর্যন্ত বিনিয়োগ নিরাপদ।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১৯ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময় ছিল ৩১ পয়সা। প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২৮ পয়সা, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৬০ পয়সা।
নগদ প্রবাহ এবং সম্পদমূল্যেও দুর্বলতা দেখা গেছে। আলোচিত সময়ে সমন্বিত নগদ প্রবাহ ছিল নেগেটিভ ৫৯ টাকা ২৩ পয়সা, আর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ৩৩ পয়সা।
২০০৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি গত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছিল। বর্তমানে কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৩৫০ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৯৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪১২ কোটি টাকা।
৩০ নভেম্বর পর্যন্ত উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে শেয়ার ছিল ৪৮.৫০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৪.২৬ শতাংশ, এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৭.২৪ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ জানা গেছে, শেয়ার মূল্যে এই ধরনের পতন কোম্পানির আর্থিক অবস্থা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে পিই রেশিও অনুযায়ী এটি এখনো বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ মনে করা হলেও, দীর্ঘমেয়াদে নগদ প্রবাহের নেতিবাচক অবস্থা বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের সাম্প্রতিক আর্থিক পতন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সতর্ক সংকেত। কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
জেজে/ডিজে