এক দিনে দুই উৎসব— বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস

বাড়ল ফুলের কদর ও দাম

১৪ ফেব্রুয়ারি— বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবস। এ দুটি উৎসব একই দিনে হওয়ায় ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় বেশি। উৎসব দুটি ঘিরে ফুলের দোকানে বেড়েছে ফুলের সরবরাহ। ফুলের বাড়তি চাহিদা মেটাতে তৈরি নগরের মোমিন রোড ও চেরাগির মোড়ের ফুলের দোকানিরা। প্রতিটি দোকানে থরে থরে বাহারি ফুলের পসরা সাজিয়েছেন তারা।

তবে বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে নগরীর ৩০০ থেকে ৩৫০ ফুলের দোকানের পাশাপাশি মৌসুমি ফুল ব্যবসায়ীদের তোড়জোড় চোখে পড়ার মত। ফুলের বড় বাজার জামালখানের চেরাগীতে ফুলের দোকানগুলোতে ক্রেতার ভিড় বেড়েছে প্রচুর। ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফুলের দামও। দুটি উৎসব একই দিনে হওয়ায় ফুল ব্যবসায়ীদের পৌষ মাসের আমেজ চলছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নগরীর প্রতিটি ফুলের দোকান সরগরম। ব্যস্ত সময় পার করছে মৌসুমি ও স্থায়ী ফুল ব্যবসায়ীরা। অন্যদিনের তুলনায় ফুলের দাম দুইগুণ-তিনগুণ বেশি হাঁকা হলেও ক্রেতারা খুব একটা আপত্তি করছে না। পছন্দমত ফুল কিনেই ফিরছে সবাই। তবে ফুল ক্রেতাদের মধ্যে তরুণ-তরুণীর সংখ্যাই বেশি।

এক দিনে দুই উৎসব— বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস 1

দেশি প্রতিটি লাল গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকা, বিদেশি লাল গোলাপ, সাদা, গোলাপী গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। রজনীগন্ধার প্রতি স্টিক ১৫ থেকে ২৫ টাকা, একগুচ্ছ সাদা চন্দ্রমল্লিকা ৭০ থেকে ১০০ টাকা, লাল, নীল, অন্যান্য রংয়ের চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা। গ্লাডিওলাস প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ২০ থেকে ২৫ টাকা, হাইব্রিড ১৫ টাকা, গাদাফুল ১০০টি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া মেয়ের ক্রাউন (মাথার রিং) ১০০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিপিস। সব ধরনের ফুলের ঝুড়ি ও মুকুটের দামও কয়েকগুণ বেড়েছে। মানভেদে ফুলের ঝুড়ি বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।

এবার চীনে কারোনা ভাইরাসের কারণে ওই দেশ থেকে পর্যাপ্ত ফুল আমদানি না হওয়ায় সেই সুযোগও কাজে লাগাচ্ছে ফুল ব্যবসায়ীরা। ৮০ টাকার চায়না লিলি ফুল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, চায়না কান্ডিশন ও অর্কিড সাধারণত প্রতি পিস ৮০ টাকায় হয়। এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। মানভেদে চায়না ফুলের দাম ওঠেছে ২০০ থেকে ৫০০-৬০০ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শারমিন বলেন, ‘খুব ইচ্ছা ছিল ফুল দিয়ে খুব বড় করে খোঁপা করবো। ফুলের যা দাম! ইচ্ছা থাকলেও কিনতে সাহস পাচ্ছি না। বিশেষ দিন আসলেই ব্যবসায়ীরা কোনও না বাহানা দিয়ে ফুলের দাম বাড়িয়ে দেয়।’

মেয়ের জন্য লাল গোলাপের গুচ্ছ কিনতে আসা ওয়াকিল হাসান বলেন, ‘একগুচ্ছ গোলাপ দিয়ে সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম তাকে। কিন্তু ফুলের যে দাম! এখন কি করবো চিন্তায় আছি। ফুল তো দিতেই হবে। ফুল ছাড়া ভালোবাসার দিনটা ফিকে হয়ে যাবে। সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে করেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’

পৌষ মাসের আমেজে থাকা ফুল ব্যবসায়ীদের ফুলের বাড়তি দামের বিষয়ে জানতে চাইলে চেরাগি মোড় ফ্লাওয়ার কিং-এর মালিক তৌহিদুর চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত উৎসব এবার একসাথে হওয়ায় ফুলের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। তার সাথে কারোনাভাইরাসের জন্য চীন থেকে ফুল তেমন আসছে না। তাই দেশিয় ফুল চাষীরা দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বাধ্য হয়ে আমাদেরও বাড়তি দামে ফুল বিক্রি করতে হচ্ছে।’

এসএ/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!