এইচএসসি পরীক্ষার সূচি পরিবর্তন ও রথযাত্রায় সরকারি ছুটিসহ সনাতনী সমাজের ৯ দফা

সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান রথযাত্রায় একদিনের সরকারি ছুটি চান চট্টগ্রামের সনাতনী সমাজের নেতারা। এবারের রথযাত্রায় চট্টগ্রাম নগরীর যানজট কমিয়ে, মানুষের দুর্ভোগ লাগবে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধসহ ওইদিনের এইচএসসি পরীক্ষার সূচি বদলানোর দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা ইসকন এবং সনাতনী সমাজ।

শনিবার (২৯ জুন) ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে সংবাদ সম্মেলন রথযাত্রার দিন এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন, সরকারি ছুটিসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সনাতনী সমাজের পক্ষে এসব দাবির কথা তুলে ধরেন শ্রীশ্রী পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।

৯ দফা দাবিতে যা রয়েছে

৯ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে রথযাত্রায় ১ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা,  এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৪ এর সময়সূচি পরিবর্তন করে রথের দিনের ইংরেজি ২য় পত্রের পরীক্ষার সূচি পরবির্তন করা, পূর্ববর্তী বিভিন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঘোষিত ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের জন্য ঘোষিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন, সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধে কঠোর আইন এবং দ্রুত ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার, দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষা ও ঐতিহ্যবাহী তীর্থস্থানসমূহ সংরক্ষণ এবং সেখানকার সম্পত্তি রক্ষা, প্রতিটি উপজেলায় সরকারি অনুদানে কেন্দ্রীয়ভাবে দৃষ্টিনন্দন মডেল মন্দির নির্মাণ, জাতীয় মহাতীর্থ শ্রী শ্রী চন্দ্রনাথ ধাম ও বাড়বকুন্ডধাম রক্ষা, সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন মঠ মন্দির পুনঃ নির্মাণ ও সংস্কারে সরকারের উদ্যোগ, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দির নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ এবং মন্দির রক্ষা করা।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য ডিজিটাল ফর্মে জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিয়ে করা ষড়যন্ত্র বন্ধ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং হিন্দু পারিবারিক আইন নিয়ে কোনো হটকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা।

সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু নেতা ও সাধু সন্ন্যাসীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথাও জানানো হয়।

এতে গণমাধ্যমকর্মীদের  বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ও স্বাগত বক্তব্য দেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক দারুব্রহ্ম জগন্নাথ দাস ব্রহ্মচারী, দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের উপদেষ্টা সম্পাদক ও গোলপাহাড় মহাশ্মশান কালীমন্দির পরিচালনা পরিষদের সহ সভাপতি আয়ান শর্মা, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শেখর বিশ্বাস, চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ আচার্য, সনাতনী জাগরণী সংঘের সভাপতি কাঞ্চন আচার্য, জাগো হিন্দু পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি রুবেল কান্তি দে, সাংবাদিক বিপ্লব পার্থ, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রণব কুমার দে।

আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর উপ কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মিঠুন বিশ্বাস, মন্দিরের সদস্য সুচারু কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, নিত্য নারায়ণ দাস ব্রহ্মচারী, পান্ডব গৌবিন্দ দাস ব্রহ্মচারী, উজ্জ্বল নিলাম্বর দাস ব্রহ্মচারী, বিশ্বরুপ কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, জয়ানন্দ বলদেব দাস, রাধাকান্ত দাস ব্রহ্মচারী, সোমনাথ দাস ব্রহ্মচারী।

লিখিত বক্তব্যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ এই রথযাত্রা মহোৎসব পৃথিবীর প্রত্যেকটি বড় বড় শহরে পৌঁছে দিয়েছেন। জাতিগত বিদ্বেষ, তথাকথিত ধর্মীয় উন্মাদনা, বর্ণবৈষম্য, অর্থনৈতিক আধিপত্য, এমনকি যুদ্ধের হুমকি ইত্যাদির আবর্তে সারাবিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষের জীবন যখন অতিষ্ঠপ্রায়, তখনই রথযাত্রার মত অসাম্প্রদায়িক উৎসব  সমগ্রবিশ্বের মানব সমাজে সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ স্থাপনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা স্থাপন করে চলেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৭ জুলাই রথযাত্রায় শুরু হয়ে ১৫ জুলাই উল্টো রথযাত্রার মধ্যদিয়ে ৯ দিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষ হবে।

জেএন/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm