চট্টগ্রামের হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা উদযাপন করল তাদের প্রথম রি-ইউনিয়ন। অনেকদিন পর সহপাঠীদের কাছে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত সবাই। ‘আর (একটিবার আয়রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়…’ এই আহ্বানে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিনভর হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ক্যাম্পাস ছিল উৎসবে মুখর।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত পর্যন্ত দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান ছিল বিভিন্ন কর্মসূচিতে ঠাসা। এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষক, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণের প্রাণবন্ত উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে করে তুলেছিল হৃদয়গ্রাহী। রি-ইউনিয়নের অনুষ্ঠান একটি দিনের জন্য হলেও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এসেছিলেন বহু স্মৃতিবিজড়িত এইচসিপিএসসি ক্যাম্পাসে, আচ্ছন্ন হয়েছে নস্টালজিয়ায়।
প্রতিষ্ঠানের প্রবেশদ্বারেই অতিথি অভ্যাগতদের বিভিন্ন উপহারে বরণ করে নেওয়া হয়। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় টি-শার্ট, ক্যাপ আর একটি ম্যাগাজিন।
অভ্যাগতদের সবার জন্য ছিল সকালের নাস্তা, দুপুরের ভোজ। বিকেলে আরেক প্রস্থ নাস্তা এবং রাতে ছিল সবার জন্য উপদেয় রাতের খাবার। সারাদিন সার্বক্ষণিক কোনো না কোনো পরিবেশনা লেগেই ছিল, ছিল চা-কফির ব্যবস্থাও।
বিশেষ অতিথি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল সামছুল আলম ছিদ্দীকি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সকাল সাড়ে ৯ টায়। তারপর প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হয় আনন্দ-র্যালি। এরপর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সকালের সেশন শুরু হয় ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রথম রি-ইউনিয়নের সভাপতি। এরপর স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী-শিক্ষকবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ। এরপর ছিল প্রাক্তন শিক্ষার্থী, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। প্রায় এক ঘন্টা জুমার নামাজের জন্য বিরতির পর ছিল মধ্যাহ্ন ভোজ। এরপর আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় র্যাফেল ড্র। সাড়ে ৪টায় দেওয়া হয় বৈকালিক নাস্তা।
প্রধান অতিথি আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুলের কমান্ড্যান্ট ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএনএম মঞ্জুরুল হক মজুমদার ও অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের আগমন ঘটে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অনুষ্ঠিত হয় দিনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আয়োজন— সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় উপস্থাপিত হয় একক গান, ব্যান্ড সংগীত ও নাচ। এরপর প্রধান অতিথির উৎসাহ ও উদ্দীপনামূলক বক্তব্যের পর ছিল সান্ধ্য-ভোজের বিরতি। এরপর ছিল আমন্ত্রিত ব্যান্ড দলের পরিবেশনা।
রাত ১০টায় সারাদিনের আনন্দ-উচ্ছ্বাস, নৃত্য-গীত, ভুরিভোজের উপচেপড়া আনন্দের ইতি টানা হয়। অন্তরে একটি দিনের আনন্দঘন স্মৃতি ধারণ করে অ্যালামনাইরা ফিরে যান নিজ নিজ ঠিকানায়।