উঠান খুঁড়ে গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শ্বশুরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজারের মহেশখালীতে শ্বশুর বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখা অবস্থায় গৃহবধূ আফরোজার লাশ উদ্ধারের ঘটনার আটদিন পর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় গৃহবধূ আফরোজার শ্বশুরসহ নয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিরা হলেন নিহত আফরোজার স্বামী রাকিব হাসান বাপ্পী, তার প্রথম স্ত্রী কামিনি আফরিন কঙ্কা, তার বোন জামাই শহিদুল ইসলাম কাজল, মা রোকেয়া হাসান, ভাই আসিফ, পিতা হাসান বশির, ভাই হাসান রাসেল, এহসান ও হাসান আরিফ।

রোববার (২৫ অক্টোবর) কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন আফরোজার পিতা মো. ইসহাক। একইসঙ্গে আদালত আফরোজার পিতার দায়েরকৃত আবেদনকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারুক ইকবাল বলেন, মহেশখালীর চাঞ্চল্যকর আফরোজা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি আমি কক্সবাজারের নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ এ রুজু করলে মাননীয় বিচারক আমার বক্তব্য শুনে বাদির ফৌজদারি দরখাস্তটি এজাহার হিসেবে গণ্য করেন। একইসঙ্গে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারা মতে এসপি, সিআইডিকে চার্জশিট দাখিলের নির্দেশ দেন এবং মহেলখালী থানার ওসিকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, কক্সজারের মহেশখালীতে নিখোঁজের ছয়দিন পর (১৭ অক্টোবর) শনিবার গৃহবধূ আফরোজা বেগমের লাশ স্বামীর বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। আফরোজার শ্বশুর বাড়ি কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা গ্রামে। ঘটনার পর নিহতের স্বামী রাকিবুল হাসান বাপ্পির প্রথম স্ত্রীর ৫ বছরের কন্যা লাশ গুমের বিষয়টি পুলিশকে জানালে ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়।

নিহতের ভাই মিজান বলেন, বিয়ের নয় মাসের মাথায় আমার বোন আফরোজাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখে। আমাদের বলা হয় আমার বোন পরকিয়ায় লিপ্ত হয়ে অন্যকারো সঙ্গে পালিয়ে গেছে। নিখোঁজের পর আমার বোনকে শ্বশুরবাড়িতে খুঁজতে গেলে মামলার আসামিরা আমাদের হুমকিসহ হয়রানি করেছে। পরে লাশ উদ্ধারের পরে কৌশলে আসামিরা পালিয়ে যায়।

এদিকে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিহত আফরোজার শ্বশুর হাসান বশির এলাকায় প্রভাবশালী লোক। সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে কৌশলে রাজনৈতিক দল পাল্টান তিনি। শুরুর দিকে তিনি জাতীয় পার্টি করলেও পরে দল পাল্টে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি শুরু করেন। তৎকালীন জামায়াত সমর্থিত এমপি হামিদুর রহমানের সঙ্গে সখ্যতা বাড়িয়ে ক্ষমতা ব্যবহার করতেন এলাকায়। বর্তমান আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে হাসান বশির বনে যান আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী। টাকা ও ক্ষমতা ব্যবহার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদও ভাগিয়ে নেন তিনি। তার অপর ছেলে হাসান আরিফ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি পদটি পাওয়ার পর বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠে। এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন ব্যবসায় ভাগ বসিয়েছেন তিনি। এলাকাবাসী হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!