চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের হোছনাবাদ ইউনিয়নের কোদলা বিটের দখলকৃত বনভূমি উদ্ধার করতে গিয়ে দখলদারদের হামলায় রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ ৭ বন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
সোমবার (৩১ মে) রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোছনাবাদ ইউনিয়নের কোদলা বন বিটের আওতাধীন পূর্ব নিশ্চিন্তাপুর এলাকায় এ লোমহর্ষক হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন- রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুক করিম, চিরিঙ্গা বিট কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, শেখ রাসেল এভিয়ারি এন্ড ইকো পার্কের স্টাফ জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, মো. আব্দুল হাই, মো. সাইফুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন। স্থানীয়রা আহত বন কর্মকতাদের উদ্ধার করে রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান।
ভূমি দখলদারদের হামলায় রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুক করিম ও চিরিঙ্গা বিট কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন মারাত্মকভাবে যখম হওয়ায় তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোছনাবাদ ইউনিয়নের কোদলা বন বিটের আওতাধীন অবস্থিত শেখ রাসেল এভিয়ারি এন্ড ইকো পার্কের উত্তর-পশ্চিম সীমানার পাশ ঘেঁষে জঙ্গল নিচিন্তাপুর নামক এলাকায় পার্কের সীমানার জায়গা দখল করে অবৈধভাবে কয়েকটি ঘর বাড়ি নির্মাণ করেন দখলকারীরা। এমন খবর পেয়ে কোদলা বন বিটের কর্মকতারা প্রাথমিকভাবে ঘর নির্মাণে বাধা দেন।
বন বিভাগের বাধা উপেক্ষা করে রাতের অন্ধকারে ৪-৫টা ঘর নির্মাণ করে দখলদারেরা। পরদিন কোদলা বিট বিষয়টি রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জকে জানালে রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ চিরিঙ্গা বিটকে নিয়ে অবৈধভাবে নির্মাণ করা স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান করতে যায়। উচ্ছেদ অভিযানের শেষ পর্যায়ে হঠাৎ দখলকারীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অভিযান পরিচালনাকারী বন কর্মকর্তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুক করিম বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের আওতাধীন হোছনাবাদ ইউনিয়নে কোদলা বন বিটের পূর্ব নিশ্চিন্তাপুর এলাকার শেখ রাসেল এভিয়ারি এন্ড ইকো পার্কের উত্তর-পশ্চিম সীমানার সংরক্ষিত জায়গা দখল করে অবৈধভাবে কয়েকটি ঘর নির্মাণ করেছিল দখলদারেরা। খবর পেয়ে রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ উক্ত এলাকায় দখলকৃত জায়গায় নির্মিত ঘর উচ্ছেদ করতে গেলে, দখলদাররা সংঘবদ্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে তাদের উপর হামলা চালায়। হামলায় আমিসহ ৭ বন কর্মকর্তা আহত হন। এব্যাপারে হামলাকারিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব মিল্কি বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বনের জায়গার দখল নিয়ে দখলদারদের সঙ্গে বন কর্মকর্তাদের একটা বিরোধ চলে আসছিল। আজ দখলদারেরা বন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করেছে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত পৃর্বক আইনি ব্যবস্থা নেব।’
কেএস