ইয়াবা নিয়ে পটিয়ায় ধরা পড়লো চকরিয়ার ব্যবসায়ী লতিফ হত্যা মামলার আসামি

ইয়াবা নিয়েই ধরা পড়লো এবার কক্সবাজারের চকরিয়ায় ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যা মামলার আসামি মিজানুর রহমান মিজান (৪২)। র‍্যাব ও পুলিশ হন্য হয়ে খুঁজলেও তাকে তারা ধরতে পারেনি। ৫০০ পিস ইয়াবা পাচারের সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতেই ধরা পড়ে মিজান।

শনিবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মিজানেএ বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় পটিয়া থানায়। প্রযুক্তির সহযোগিতায় মাদক মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর পুলিশ মিজানকে লতিফ হত্যা মামলার আসামী হিসেবে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর রহমান মিজান ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার বালকদিয়া বিনয়কাঠি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত জলিল আকনের ছেলে।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পৌরশহরের চিংড়ি চত্বর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন আসামী মো. নয়নকে (৩০)। নয়ন চকরিয়া পৌরশহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নামার চিরিঙ্গা মুজিবুর রহমানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ছিনতাই, লুটপাট, মারামারিসহ বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে।

নিহত ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ (৩৬) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের সুফিপাড়া এলাকার মৃত ইলিয়াছ সওদাগরের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরশহরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে লতিফ উল্লাহর কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিকাশ এজেন্ট রয়েছে। গত ৩ জানুয়ারী রাতে ফোন করে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন লতিফকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যার পর থেকে একটি মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে র‌্যাব ও পুলিশের একাধিক টিম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযানও চালায়।

কিন্তু তার আগে ১৪ জানুয়ারী ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামী মিজানুর রহমান মিজানকে ৫০০ পিস ইয়াবা সহ গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে পটিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়।

পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হওয়া মিজানই ব্যবসায়ী লতিফ হত্যা মামলার অন্যতম আসামী।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসায়ী লতিফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগে নয়ন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে তার কাছ থেকে। মিজানের মোবাইল নম্বরে লতিফ উল্লাহর বিকাশ এজেন্ট নম্বর থেকে ৩০ হাজার টাকার লেনদেন হয়। এরপর ওই এলাকার বিভিন্ন সিসি টিভির ফুটেজেও মিজানের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল সেটের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত আসামী মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারে পুলিশসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাঠে নামে। মোবাইলে পটিয়া থানায় সর্বশেষ লোকেশন নিশ্চিত হয় পুলিশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরে পটিয়া থানা পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাকে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে প্রেরণও করে। কিন্তু পুলিশের মোবাইল ট্র‍্যাকিংয়ে বারবার পটিয়া থানা এলাকায় তার লোকেশন দেখা যায়। পরে পটিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হই মোবাইলটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তারকৃত মিজানের। এরপর ১৫ জানুয়ারী ব্যবসায়ী লতিফ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মিজানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত হন চকরিয়া থানা পুলিশ।’

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি বলেন, ‘ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যা মামলায় মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। তাকে খুব শীঘ্রই চকরিয়া আদালতে এনে রিমাণ্ড চাওয়া হবে। রিমাণ্ডের পর ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন হতে পারে।’

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!