চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সব ভোট কেন্দ্রেই গোপন বুথে ঢুকে মেয়র ও পুরুষ কাউন্সিলর প্রার্থীর ভোট দিয়ে দিয়েছেন নৌকার সমর্থকরাই— এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে ভোট শুরু হওয়ার পর থেকেই।
৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের আমিরুন্নেসা প্রাইমারি এন্ড কেজি স্কুল কেন্দ্র থেকে এক ব্যক্তির ধারণ করা ভিডিওতে দেখা গেল, ইভিএমের গোপন কক্ষে একজন ভোটারকে রীতিমতো জোরজবরদস্তি করা হচ্ছে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য।
এদিকে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আব্দুর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের গোপন বুথের চিত্র তুলে ধরেন ইকবাল হোসাইন নামের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।

ফেসবুকে তিনি লিখেন, ‘ভোট হয় না এই অজুহাতে যখন সচেতন নাগরিক ভোটের দিন বাসা থেকেই বের হয় না, সেখানে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বের হচ্ছি প্রথম মেয়র ইলেকশনে ভোট দিতে। লাইফের প্রথম মেয়র ইলেকশনে ভোট দিতে গেলাম আবদুর পাড়া!’
‘কেন্দ্রে পৌঁছে দেখলাম স্কুল গেইট বন্ধ, আইডি কার্ড দেখানোর পর ভিতরে ডুকতে দিলো। কোন লাইন নেই, নেই ভোটারের আধিক্য। ফাঁকা কেন্দ্র, পঁচিশ-উর্ধ্ব কিছু যুবক ঘোরাঘুরি করছে ভেতরে। সাথে আছে পুলিশ আর প্যারা পুলিশ বাহিনী। ভিতরে ঢুকলাম, আইডি কার্ডের নাম্বার মিলিয়ে বললো ৩য় তলার ৯নং রুমে যান। গেলাম ৯ নং রুমে, আইডি কার্ড নিয়ে আঙ্গুলের চাপ মিলালো! বললো যান এবার ভোট দেন’— লিখেছেন চবির ওই শিক্ষার্থী।
তিনি আরও লিখেন, ‘এবার ভোট দেওয়ার পালা। ভোট হবে ইভিএম। লাল কাপড়ে ঢাকা একটা কোণায়— যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সুঠাম দেহের দুই পাঠান যুবক! বুকে ইসমাইল ভাই (টিফিন) এর ব্যাজ সাঁটানো। আমি ভেতরে ঢুকতেই তারা বললো কিসে ভোট দেবেন?’
গোপন বুথে ইভিএম কাণ্ডের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ওই শিক্ষার্থী লিখেছেন, আমি বললাম আপনারা এখানে কেন? আমার ভোট কি আপনারা দেবেন? একজন বললো, নিয়ম দেখিয়ে দেবো। বললাম আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত একজন নাগরিক। আমাকে দেখাতে হবে না কিসে ভোট দিতে হবে। আপনারা এখানে কেন? বাইরে যান, আমার কাজ আমাকে করতে দিন। এটা বলতেই একজন বলে উঠলো ধুর ভাই, বেশি কথা বলার দরকার নেই তো! আরেকজন ঠুসঠাস করে টিফিন (ইসমাইল, কাউন্সিলর), নৌকা (রেজাউল, মেয়র) প্রেস করে কনফার্ম বাটন প্রেস করে বাইরে চলে গেলো, বললো ভোট শেষ করেন।’
তিনি লিখেন, ‘আরও একটা মেশিনে ভোট দিতে হবে, সেটা হলো মহিলা কাউন্সিল প্রার্থীর! বুঝলাম নির্বাচনটা তাহলে কেবল মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচন হচ্ছে। অবশ্য মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীর কাউকেই চিনি না। প্রথম নাম্বারে ছিলো টেলিফোন। যে কোন একটাতে প্রেস না করে বের হওয়া যাবে না। সো, প্রথমটাতে প্রেস করেই বেরিয়ে আসলাম লালসালুর ভেতর থেকে। এক আপু আলতো করে ধরে লেপন করে দিলো ভালোবাসার ছোঁয়া (মার্কারের দাগ)!’
সিপি