ইউরোপের স্বপ্ন দেখিয়ে কর্মচারীর ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো চট্টগ্রামের রেল শ্রমিক লীগ নেতা

টাকা ফেরত পেতে সিলেটের আদালতে মামলা

ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে এক রেল কর্মচারীর সাড়ে ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের এক রেল শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে। স্বজনদের বিদেশ পাঠাতে ঋণ করে টাকা নেওয়া সেই রেল কর্মচারীকে প্রতিদিন গুণতে হচ্ছে চড়া সুদ। একইসঙ্গে এসব টাকা দেওয়ার মারপ্যাঁচে সংসার ভেঙেছে তার বোনের।

এই ঘটনায় সেই রেল শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে আদালতে তিনটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী কর্মচারী।

অভিযুক্ত রেল শ্রমিক লীগ নেতার নাম মিজানুর রহমান। তিনি রেল শ্রমিক লীগের (একাংশ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে আগেও অর্থ আত্মসাতের কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ রেল হাউজিংয়ে বসবাস করেন।

মিজানুর রহমান বর্তমানে স্টুয়ার্ড পদে চট্টগ্রামের সিআরবি রেলওয়ে হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

মামলায় মিজানুর রহমানের সঙ্গে তার পিতা বাচ্চু মিয়াকেও আসামি করেন ভুক্তভোগী রেল কর্মচারী জুনায়েদ মিয়া। জুনায়েদ বর্তমানে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সিলেটের শায়েস্তাগঞ্জ এসএসএ’র অধীনে কার্পেন্টার পদে কর্মরত আছেন।

জানা গেছে, ২০২১ সালে রেল কর্মচারী জুনায়েদ মিয়ার দুই আত্মীয়কে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে তার কাছ থেকে সাড়ে ২২ লাখ টাকা নেন মিজানুর রহমান। এর বিপরীতে বিভিন্ন সময় তিনি জুনায়েদের নামে মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাড়ে ২২ লাখ টাকার চেক দেন।

পরে টাকা নেওয়ার পরও জুনায়েদের আত্মীয়কে বিদেশে পাঠানো না হলে টাকা ফেরত চান তিনি। কিন্তু বিভিন্ন সময় টালবাহানা করতে থাকেন মিজানুর। এক পর্যায়ে জুনায়েদ এই ঘটনায় সিলেটের শায়েস্তাগঞ্জের হবিগঞ্জ আদালতে মিজানুরের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন। এরমধ্যে দুটি মামলায় মিজানুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মূলত রেলে চাকরির সুবাদে মিজানুরের সঙ্গে পূর্ব পরিচয় ছিল জুনায়েদের। মিজানুরের ভাই ইউরোপে থাকায় জুনায়েদের পরিবারের দুই সদস্যকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। পরে সেই কথা অনুযায়ী রাজি হন জুনায়েদ এবং টাকাও দেন বিভিন্ন দফায়।

জুনায়েদ মিয়া বলেন, ‘ইউরোপে দুই আত্মীয়কে পাঠানোর জন্য চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সাড়ে ২২ লাখ টাকা দিই মিজানুরকে। এখনও পর্যন্ত আবার পরিবারের কাউকে ইউরোপে পাঠানো হয়নি। বেতন ও পেনশনের টাকায় এখনও পর্যন্ত ঋণের সুদ টেনে যাচ্ছি। এমনকি বোনের গয়না বন্ধক দিয়েও টাকা নিই আমি। আর এই কারণে আমার বোনের সংসারও ভেঙে গেছে।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, ‘এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’

এদিকে সিআরবি রেল হাসপাতাল বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার শিবু নাথ বলেন, ‘মিজানুর রহমান তিন মাস যাবৎ বিনা নোটিশে অফিসে অনুপস্থিত। শিগগির তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm